আবার ধাক্কা ‘ইন্ডিয়া’য় ! এবার জোট ছেড়ে এনডিএ-র পথে ফারুক আবদুল্লা

আবার ধাক্কা ‘ইন্ডিয়া’য় ! এবার জোট ছেড়ে এনডিএ-র পথে ফারুক আবদুল্লা

farooq abdullah

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট আরও কত ভাঙবে তা গুণতে এবার বোধহয় ক্যালকুলেটর লাগবে। যতদিন যাচ্ছে ততই ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে বিরোধীদের জোট। এবার জোট ছাড়লেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রবীণ নেতা ফারুক আবদুল্লা। বৃহস্পতিবার বিরোধী জোট ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি । সেই সঙ্গে এনডিএ জোটে তাঁর দল সামিল হতে চলেছে বলে জল্পনা তুঙ্গে। ফারুকের বক্তব্যে তেমনটাই মনে করা হচ্ছে।

লোকসভা নির্বাচনে একা লড়ার বার্তা দিলেন জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের প্রধান তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। উপত্যকার প্রত্যেকটি আসনে একাই লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। অথচ সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্সের জোট হবে, এমনটাই মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু বৃহস্পতিবার ফারুক আবদুল্লা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নিজেদের শক্তিতেই লোকসভা নির্বাচনে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। তিনি বলেছেন,”আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নিয়ে আমি স্পষ্ট করে একথাই বলতে চাই যে, ন্যাশনাল কনফারেন্স তাদের নিজের শক্তিতে নির্বাচনে লড়বে। এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। আর এটা নিয়ে আর কোনও প্রশ্নও থাকা উচিত নয়।” এর পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনও হবে বলে ফারুক মনে করছেন। সেই নির্বাচনেও একাই লড়তে চান ফারুক। তবে বিরোধীদের দাবি কাশ্মীরে ক্রিকেট বোর্ড সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় যেহেতু ইডি তলব করেছিল ফারুককে, তাই গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে তিনি জোট ছাড়লেন। শুধু জোট ছাড়াই নয়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের মতো তিনিও বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে যেতে পারেন বলে সূত্রের খবর। এদিন  তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে,”এনডিও জোটে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না।”

শ্রীনগরে যেদিন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শেষ করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী সেদিন রাহুলের পাশেই দেখা গিয়েছিল ফারুকের পুত্র ওমর আবদুল্লাকে। তাই এখন ফারুক যেভাবে একলা চলার কথা ঘোষণা করলেন তাতে ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিঃসন্দেহে ফের বড় ধাক্কা খেল। আসলে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠনের পর এতগুলি মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তা নিয়ে কিছুদিন আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করতেন দেখা গিয়েছিল ফারুককে। সেই সময় তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,”দেশকে যদি আমাদের বাঁচানোর ইচ্ছা থাকে তাহলে নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য ভুলে দেশ নিয়ে ভাবতে হবে।” এরপরেও কেন তিনি একলা চলার কথা বললেন তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে।

গত কয়েক মাসে ন্যাশনাল কনফারেন্সের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিজেপিতে যোগদান করেছেন। এরপরই ফারুক যেভাবে একলা চলোর কথা বললেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। অধিকাংশ রাজ্যে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করতে পারেনি বিরোধীরা। এই আবহের মধ্যে ‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে বেরিয়ে গেলেন ফারুক। গত লোকসভা নির্বাচনে জম্মু-কাশ্মীরে তিনটি আসনে জয়লাভ করেছিল ফারুকের দল ন্যাশনাল কনফারেন্স। তাই উপত্যকায় ন্যাশনাল কনফারেন্সকে পাশে পেলে বিজেপি তথা এনডিএ-র ফল যে খুবই ভাল হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। উল্লেখ্য অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেই সময় এনডিএ জোটে ছিলেন ফারুক। তাঁর পুত্র ওমর আবদুল্লা সেই সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। তবে কি আবারও আড়াই দশক আগেকার পরিস্থিতি কেন্দ্রে তৈরি হবে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। অর্থাৎ নীতিশ কুমারের পথে হেঁটেই গেরুয়া শিবিরের এনডিএ-তে যোগদান করতে চলেছেন ফারুক আবদুল্লা। এমন ধাক্কা যে আসবে সেটা ভাবতেও পারেনি বিরোধীরা। যত দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে তাদের কাছে। এখন একটাই প্রশ্ন তাদের মধ্যে উঁকি মারছে, এরপর কার পালা? এর উত্তর রয়েছে সময়ের গর্ভে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =