তিয়াষা গুপ্ত: লোকসভা ভোট দোড়গড়ায়। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতি বৈঠকে ফোকাস ১৯। তবে বাংলাকে বিজেপি যে প্রথম থেকে গুরুত্ব দিচ্ছে, তা আরো একবার প্রমাণ হল অমিত শাহর কথায়। এদিন তাঁর বার্তা, ১৯-এ বিজেপি দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরলে পরবর্তী লক্ষ্য হবে বাংলা দখল। একইসঙ্গে জানিয়ে দিলেন, বাংলায় ক্ষমতায় আসতে প্রস্তুত বিজেপি। এর আগে লোকসভায় বাংলা থেকে ৫০ শতাংশ আসন পাওয়ার টার্গেট বেঁধে দিয়েছিলেন অমিত। সেবারও অমিতের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবারও সেই ধারা অব্যাহত থাকল। তাঁর কথায়, এটা অমিত শাহর দিবাস্বপ্ন।
মন্দির, খোল-করতাল আর হিন্দুত্ব এসবেই কি ফিরতে চাইছে বিজেপি** রামলীলা ময়দানে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের প্রথম দিনেই সেই সম্ভবনা উঁকি দিল। ক্ষমতায় আসার আগে মোদী বারবার উন্নয়নের স্বপ্ন ফেরি করেছেন। কিন্তু এদিন জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যেভাবে মন্দির গড়ার কথা বললেন বিজপি সভাপতি তাতে প্রশ্ন উঠছে বিজেপি কি হিন্দুত্ব লাইন আঁকড়ে ১৯- পেরোতে চাইছে?
লোকসভা বোটের রণকৌশল ঠিক করে দেওয়ায় এই বৈঠকের মূল ফোকাস। মোদীকে কীভাবে ক্ষমতায় ফেরানো যায়, তার পরিকল্পনা ও রূপরেখা তৈরি করা হবে ২ দিন ধরে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ।
বিজেপি সভাপতি বলেন, ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করে মোদী কোটি কোটি যুবকের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এই বিল নিয়ে বিরোধীরা কোনো সহানুভূতি দেখায়নি বলে মনে করেন অমিত। এনআরসি নিয়ে তিনি বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম দফায় শুধু ৪০ লাখ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করা গেছে।
কংগ্রেস সভাপতি রাহিল গান্ধী বিভিন্ন সময় চৌকিদার চোর হ্যায় বলে মোদীকে আক্রমণ করেছেন। এর জবাবে অমিত বলেন, চৌকিদার চোরদের রেয়াত করবেন না। মায়াবতী ও অখিলেশের জোট নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। তাঁর কথায়, এটা মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া বিজেপি যে পাকিস্তানকে সবক শেখাতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে পেরেছে, তাও উল্লেখ করে সরকারের গড়িমা প্রকাশ করেন অমিত।
এদিনের বৈঠকের সূচনায় হাজির ছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, নীতিন গড়কড়ি, সুষমা স্বরাজ প্রমুখ। মোদী সরকারের সাফল্য হাতিয়ার করে কীভাবে ভোটযুদ্ধে নামবে বিজেপি তার রণকৌশল ঠিক করা হবে ২ দিন ধরে। এটা একপ্রকার নিশ্চিত। পাশাপাশি রামমন্দির নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, তা লাখ টাকার প্রশ্ন। মন্দির ও হিন্দুত্ব লাইন বিজেপি যে ছাড়বে না, এর মধ্যেই প্রমাণ পাওয়া গেছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি রথ চালাতে মরিয়া। ফলে হিন্দুত্ব আঁকড়ে বিজেপির বিজয় রথ কি দিল্লি ভিড়বে? দেখা যাক।
বিরোধীরা রাফালে থেকে কৃষক সমস্যা নিয়ে মোদীকে নাস্তানাবুদ করে রেখেছে। এছাড়া ১৯-এ বিজেপি কে ঠেকাতে বিভিন্ন জাতীয় ও দলের মধ্যে আঞ্চলিক জোট গড়ার প্রয়াস শুরু হয়েছে। ফলে বিজেপি কীভাবে বিরোধীদের বাউন্সার ট্যাকেল করে এখন সেটাই দেখার।