বেঙ্গালুরু: মহিলা যাত্রী ঋতুস্রাব জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, দয়া করে তাঁকে সহযোগিতা করুন। সহযাত্রী পুরুষ বন্ধুর টুইট দেখে সত্ত্বর পদক্ষেপ নিল ভারতীয় রেলের সেবা বিভাগ। রাত ১০টার কিছু পরে টুইট করে এই বার্তা রেলওয়ের কাছে পৌঁছে দেন বেঙ্গালুরু থেকে বল্লারিগামী ট্রেনের যাত্রী বিশাল খানাপুরে।তিনি স্থানীয় কালাবুর্গি এলাকার বাসিন্দা,চাকরি সূত্রে থাকেন হায়দরা বাদে। বল্লারীগামী হসপেট ট্রেনটিতে চেপে তিনি কর্মক্ষেত্রে উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন,একই ট্রেনে ছিলেন তাঁর বান্ধবী, আচমকাই তিনি অনুভব করেন যেকোনও মুহূর্তে ঋতুস্রাব শুরু হতে পারে,কেননা পিরিয়ডকালীন যন্ত্রণা শুরু হয়েছে,ঘড়িতে দশটা বেজেছে অনেক্ষণ আগে,ট্রেনও স্টেশন ছেড়ে দিয়েছে। উপায়ান্তর না দেখে বন্ধু বিশালকেই সমস্যার কথা খুলে বলেন।
বিশাল পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ইন্ডিয়ান রেলওয়েকেই টুইট করে সাহায্য চান। বলাবাহুল্য, বিশালের টুইটের জবাব আসে দ্রুতই পরবর্তী স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে এক আধিকারিক ওই মহিলাযাত্রীর কাছে পৌঁছে যান। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কি কি সহযোগিতা লাগতে পারে জেনে নেন, মহিলার ফোন নম্বরও সঙ্গে নেন। এরপর মাইসোর রেলের তরফে রাত দুটো নাগাদ ওই যাত্রীর কাছে প্যাড ও ওষুধ পৌঁছে যায়। যাত্রীর কাছে প্যাড ও ওষুধ পৌঁছে যায়। ভারতীয় রেলের সেবা বিভাগের এই তৎপরতায় অবাক বিশাল খানাপুরে। সঙ্গে সঙ্গে বানধবীর হয়ে আরও একটি টুইট করে রেলওয়েকে ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি ওই যুবক।
একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের শেষে পৌঁছে দেশের সামাজিক পরিস্থিতির যে বদল আসছে, তা বেশ স্প্ষ্ট। ঠিক দশর বছর আগের ছবিটি চিন্তা করুন। বিশাল খানাপুরে তাঁর বান্ধবীর জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ওষুধের সাহায্য চাইছেন রেলকর্তাদের কাছে, কী হত তাহলে? প্রথমত বিশাল আদৌ চাইতে পারতেন কি না তা বড়ব্যাপার, তাছাড়া বান্ধবী বন্ধুকেই পিরিয়ডের কথা বলতে পারতেন কিনা তানিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
আর যদিও বা সাহায্য চেয়ে থাকন তাহলেও অনেকগুলো ভুড়ো একসঙ্গে কুঁচকে যেত। যাইহোক পিরিয়ড নিয়ে ভারতীয় সমজ ব্যবস্থায় যে ছুঁৎমার্গ রয়েছে তা যে ধীরে ধীরে কমছে এই ঘটনা অন্তত তাই বলে। মোটের উপরে বলতেই হয়, কোনও বড়মাপের উপকার বলতে বিরাট কিছু করা নয়, বৃহত্তর পরিবর্তনও নয়, এরকম ছোট ছোট মানবিক কাজই দেশের চেহারা বদলাতে পারে।