নয়াদিল্লি: দারিদ্র যে কোনও দেশের কাছেই এক অভিশাপ৷ অগ্রগতির পথে অন্তরায়৷ তবে ভারতের জন্য সুখবর৷ আমাদের দেশে চরম দারিদ্র আর রইল না৷ আম জনতার আর্থিক উন্নতি ভারতকে এগিয়ে নিয়ে গেল বেশ কয়েক ধাপ৷ সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই তথ্য৷ ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ধীরে ধীরে দারিদ্রর চরম সীমা ছাড়িয়ে উপরে উঠে আসছে দেশ।
কিন্তু, কোন জাদুবলে ‘গরিবি’র কালো ছায়া কাটিয়ে উঠল ভারত?
বিশষজ্ঞরা বলছেন, গরিবি হঠাতে একাধিক বড় পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। সম্পদের পুনর্বণ্টনে কড়া সরকারি নীতি গ্রহণ করা হয়েছে৷ যার জেরে কমেছে দারিদ্র্য৷ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, গত ১০ বছরে ২৫ কোটিরও বেশি ভারতীয়কে চরম দারিদ্রসীমার বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্র। তাঁর সেই বক্তব্যে কার্যত সিলমোহর দিল মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘ব্রুকিংস’৷ জিডিপি বৃদ্ধির হার প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যেতেই এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করল তারা৷ লোকসভা ভোটের আগে এই সমীক্ষা রিপোর্ট যথেষ্ট স্বস্তিতে রাখল গেরুয়া শিবিরকে৷
গত ১০ বছরে এটাই দারিদ্রের সমীক্ষা ভিত্তিক হিসাব। ২০১১-১২ সালে শেষ সমীক্ষা হয়েছিল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী,২০১১-১২ থেকে প্রতি বছর মাথা পিছু খরচের পরিমাণ ২.৯ শতাংশ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরাঞ্চলে ২.৬ শতাংশ করে বেড়েছে মাথা পিছু খরচের হার। অন্যদিকে, শহুরে অঞ্চলকে টেক্কা দিয়ে গ্রামীণ এলাকায় মাথা পিছু খরচের পরিমাণ বেড়েছে ৩.১ শতাংশ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম ও শহরাঞ্চলে সামাজিক অসাম্য বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। এর আগে শহর ও গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে মাথা পিছু খরচের ফারাক ছিল বিস্তর। ২০১১-১২ অর্থবর্ষ থেকে তা কমতে শুরু করে। শহরাঞ্চলে আর্থিক বৈষম্যের পরিমাণ ৩৬.৭ থেকে কমে ৩১.০৯ শতাংশ হয়। অন্যদিকে, গ্রামাঞ্চলে আর্থিক বৈষম্যের হার ২৮.৭ থেকে নেমে এসেছে ২৭ শতাংশে।
ব্রুকিংসের সমীক্ষকদের দাবি, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে ভারতে দরিদ্র বাসিন্দার সংখ্যা ছিল ১২.২ শতাংশ। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে তা নেমে এসেছে ২ শতাংশে। রিপোর্ট বলছে, আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্যের ফারাক কমিয়ে আনতেও সক্ষম হয়েছে নয়াদিল্লি। একটা সময় ভারতের সাধারণ নাগরিকের গড় ক্রয় ক্ষমতা ছিল ১.৯ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫৮ টাকা। বর্তমানে এই ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। ফলে চরম গরিবি বা দারিদ্র স্থিতি যে ভারত কাটিয়ে উঠেছে তা স্পষ্ট৷