নয়াদিল্লি: বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনে EVM-এর উপরই অনড় রইলেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল অরোরা৷ বৃহস্পতিবা রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল অরোরা সাফ জানিয়ে দেন, ‘কোনও ভাবেই ব্যালট যুগে ফেরা হবে না৷’ এদিন EVM হ্যাকের প্রসঙ্গ সরাসরি না তুলেও জানিয়ে দেন, EVM ব্যবস্থায় পূর্ণ আস্থা রয়েছে কমিশনের৷ ফলে, EVM-এর পরিবর্তে অন্যকোনও ভাবনাই নেয় নির্বাচন কমিশনের৷ কিন্তু, হঠাৎ কেন এমন মন্তব্য কমিশনের?
কেননা, চলতি সপ্তাহে কমিশনের অস্বস্তি বাড়িয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন মার্কিন হ্যাকার৷ বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে কমমাত্রার তরঙ্গ পাঠিয়ে তিনি EVM হ্যাক করেছিলেন৷ মার্কিন হ্যাকারের মন্তব্য ঘিরে জাতীয় রাজনীতির ময়দায় গরম করতে মাঠে নামে কংগ্রেস ও বিরোধীরাও৷ বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পথে হাঁটে জাতীয় নির্বাচন কমিশন৷ ইভিএম হ্যাকের অভিযোগ তোলায় মার্কিন হ্যাকারের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর দার করে নির্বাচন কমিশন৷ কমিশনের যুক্তি, ইভিএম হ্যাক করা যায় না৷ ফলে, নির্বাচন ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন ওঠায় অভিযুক্ত মার্কিন হ্যাকারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা দেওয়ার জন্যই এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে৷
সোমবার EVM-এ জালিয়াতির অভিযোগ উঠতেই মঙ্গলবার আসরে নামে বিজেপি৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কংগ্রেসের মুখোশ খুলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ এদিন তিনি বলেন, ‘‘ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা৷ কংগ্রেস রাজনৈতিক সুবিধা নিতে এই সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে৷’’ বলেন, ‘‘একজন হ্যাক কী বলল, তা নিয়েই মাতামাতি করছে কংগ্রেস৷ কিন্তু, যখন নির্বাচন কমিশমন ইভিএম নিয়ে চ্যালেজ্ঞ ডেকেছিল, তখন কেন কিছুই বলেনি কংগ্রেস?’’ ইভিএম দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে কংগ্রেসে মুখোশ খুলে যাবে বলেও এদিন কটাক্ষ করেন তিনি৷
কীভাবে ভারতের নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোটযন্ত্রে কারচুপি করা সম্ভব, তা সবিস্তারে হাতেকলমে দেখাবেন লন্ডনের হ্যাকার, রবিবার থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে এই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়৷ পরে জানা যায়, ওই মার্কিন হ্যাকারের নাম সইদ সুজা৷ সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দাবি করেন, ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের প্রাক্তন কর্মী তিনি৷ ভোটযন্ত্রের নকশা তৈরির কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন৷ ফলে কীভাবে তাতে কারচুপি করা যায়, সেটা তাঁর কণ্ঠস্থ৷ অভিযোগ, ২০১৪ সালের ভোটে ইভিএম কারচুপির কথা জানতে পারার পর থেকেই নাকি তিনি প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন৷ তাই ব্রিটেনের কূটনেতিক আশ্রয় নিয়ে লন্ডনে রয়েছেন৷
মার্কিন হ্যাকারের আরও দাবি, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমে কারচুপি করা হয়েছে৷ আর ভারতে ব্যবহৃত ভোটযন্ত্রে কীভাবে কারচুপি করা সম্ভব, তা জানাতে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ডাকেন তিনি৷ তখন সেখানে উপস্থিত প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল৷ অবশ্য সাংবাদিক বৈঠক শেষে সুজাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘আপনি যা যা দাবি করছেন, তার সবটাই কি ঠিক বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে?’’ উত্তরে মাথা নাড়িয়ে বলেন, ‘‘না না, এখনই নয়৷’’ এর পরই মার্কিন হ্যাকারের দাবিকে ঘিরে রাজনীতির ময়দানে নামে কংগ্রেস৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সেই অভিযোগ উড়য়ে দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷
CEC Sunil Arora in Delhi: We will continue to use EVMs & VVPATs. We are open to any criticism & feedback from any stakeholder including political parties. At the same time, we are not going to be intimidated, bullied or coerced into giving up these and start era of ballot papers. pic.twitter.com/bco5DOSfTd
— ANI (@ANI) January 24, 2019