কলকাতা: ব্রিগেড সমাবেশে রাজনীতির রাজনীতির আলো ছিনিয়ে এনে মহাজোটের বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের দখল দেখাতে অঙ্কও ছকে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস৷ রবিবার নয়া চমক দিয়ে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েদেন, লোকসভা নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে ১৪টি রাজ্যে প্রার্থী দেবে তৃণমূল৷ ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতিও শেষ হয়ে গিয়েছে বলেও জানান তিনি৷
এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডেরেক বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে আমরা সর্বশক্তি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব৷ আর সেই কারণে, ওড়িশা-সহ ১৪ রাজ্যে তৃণমূল প্রার্থী দেবে৷ বেশিরভাগ আসনেই আমরা লড়াই চালিয়ে যাব৷’’ এদিন তিনি আরও একবার মনে করিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের লক্ষ্য ৪২-এ ৪২৷
পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, রাজ্য থেকে কমপক্ষে ৩৫টি আসন তৃণমূলের ঝুলিতে গেলে সরকার গঠনে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে তৃণমূল৷ আর ১৪ রাজ্যে থেকে কম করে একটি করেও আসন বের করে আনতে পারলে সেই দাবি আরও জোরদার হবে৷ উত্তর-পূর্ব ভারতের সব থেকে শক্তিশালী দলকে ছেড়ে সরকার গঠন করার কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পারে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
যদিও, এবারের জনমত সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট হলে ত্রিশঙ্কু লোকসভার সম্ভাবনাই প্রবল৷ ইন্ডিয়া টুডে-কার্ভির ‘মুড অফ দ্য নেশন’ সমীক্ষা বলছে, মোদি ঝড়ে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা কম৷ সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র ভাগ্যে জুটতে পারে ২৩৭টি আসন, অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ২৭২-এর অনেক কম৷ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ পেতে পারে ১৬০টি আসন, আর অন্যান্যদের ঝুলিতে যেতে পারে ১৪০টি আসন৷ সমীক্ষা মিললে গতবারের তুলনায় ৯৯টি আসন কমবে এনডিএ-র। ইউপিএ-র আসন বাড়বে ১০৬টি এবং অন্যান্যদের আসন কমবে ১৩টি৷ ভোট শতাংশের ভিত্তিতে এনডিএ ৩৫ শতাংশ এবং ইউপিএ ৩৩ শতাংশ ভোট পেলেও ২০১৪-এর তুলনায় এনডিএ-র ভোট শতাংশ কমার পূর্বাভাস৷ সমীক্ষা মিলল, এনডিএ-র ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা থাকছে ঠিকই, কিন্তু সেটা অন্যান্য আঞ্চলিক দলের সাহায্যে৷ আর সেক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী বাদে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি উঠতেই পারে৷ ফলে, ১৪ রাজ্যে তৃণমূলের এই প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণার পেছনে দিল্লি দখলের অঙ্ক রয়েছে, তা বেশ স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল সাংসদ৷