মমতার ধর্নায় হাজিরা! বাংলার ৫ IPS-এর পদক কাড়তে পারে কেন্দ্র : সূত্র

নয়াদিল্লি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নায় হাজির থাকার জেরে রাজ্যের পাঁচ আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই পাঁচ আধিকারিকরা হলেন রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্র, এডিজি বিনীত কুমার গোয়েল, এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মা, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিং ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার। তাঁদের কোনও রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত পদক থাকলে তা

50790321549ea656003ec944f1ed4b0d

মমতার ধর্নায় হাজিরা! বাংলার ৫ IPS-এর পদক কাড়তে পারে কেন্দ্র : সূত্র

নয়াদিল্লি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নায় হাজির থাকার জেরে রাজ্যের পাঁচ আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই পাঁচ আধিকারিকরা হলেন রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্র, এডিজি বিনীত কুমার গোয়েল, এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মা, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিং ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার। তাঁদের কোনও রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত পদক থাকলে তা কেড়ে নেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি সেন্ট্রাল ডেপুটেশনেও ওই পাঁচ অফিসারকে নেওয়া হবে না বলে খবর।

পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ আগেই খারিজ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধর্না প্রত্যাহার করে নেওয়ার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী৷ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি খবর পেলাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চিঠি পাঠিয়েছে৷ বলা হচ্ছে, রাজীব কুমার একজন আইপিএস অফিসার হয়ে কি করে আমার ধর্নায় যোগ দিল? আপনারাই বলুন৷ আমার ধর্না মঞ্চে রাজীব কুমারকে একবারও দেখেছেন? একবারও উনি মঞ্চে এসেছেন? তিনি যোগই দেননি৷’’ এদিন রাজীব কুমারের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘চিঠির জবাব আমরা কালকে দিয়ে দেব৷’’

রাজনাথকে বার্তাকে দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপির ঘুম উড়িয়ে নয়া কর্মসূচির ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিন দিনের মাথায় কলকাতার ধর্না প্রত্যাহার করে দিল্লি যাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি৷ মেট্রো চ্যানেলের ধর্না তুলে নেওয়া হলেও আগামী ১৩ এবং ১৪ ফেব্রুায়রি দিল্লিতে ফের এই একই কর্মসূচি নেওয়া হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নায়ুডু, তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বৈঠকের পর মেট্রো চ্যানেলের থেকে ধর্না তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এই ধর্না তুলে নেওয়া হলেও গণতন্ত্র বাঁচাতে চলবে তাঁদের এই কর্মসূচি৷ এদিন মমতা বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আমাদের জয় হয়েছে৷ এই জয় গণতন্ত্রের৷ যতক্ষণ না পর্যন্ত বিজেপি সরকারের পতন হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাব৷’’

রবিবার রাতে সিঙ্গুরের ‘আমরণ অনশনে’র স্মৃতি উসকে ‘সংবিধান রক্ষায়’ রাজপথে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সিঙ্গুরে জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে ৪ ডিসেম্বর ২০০৬ সালে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে বিশাল মঞ্চ বেঁধে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছিলেন৷ সেই অনশন চলেছিল পঁচিশ দিন৷ এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে ‘সংবিধান বাঁচাতে’ কলকাতার রাজপথে ধর্নায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

রবিবার তৃণমূলের নেতামন্ত্রীদের সঙ্গে প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের পাশে বসিয়ে মেট্রো চ্যানেলে খোলা আকাশের নীচে বসে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রবিবার রাজীব কুমারের বাঙলোয় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘আমি এর বিহিত চাই৷ আমি সংবিধান বাঁচাতে এই ধর্নায় বসব৷’’ তৃণমূলের তরফে আগেই এই কর্মসূচির ঘোষণা করে দেন সাংসদ ডেকের ওব্রায়েন৷

রবিবার গোটা দেশকে স্তব্ধ করে সাংবিধানিক সংকট থেকে বাংলাকে রক্ষা করার জন্য রাত থেকে ধরনায় বসে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জানিয়ে দেন, ‘‘আমি সংবিধান বাঁচাতে ধরনায় বসতে চলেছি৷ দেশে জরুরি অবস্থার থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ গব্বরি কায়দায় সব কব্জা করতে চাইছে৷ তাই এই ধরনা৷ এই ধর্না মানে সত্যাগ্রহ৷’’

রবিবার সন্ধ্যায় কোনও বৈধ নথি ছাড়াই রাজীব কুমারের বাড়িতে যায়৷ আর তার জেরেই সিবিআই আধিকারিকদের আটক করে কলকাতা পুলিশ৷ পরে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়৷ সেক্সপিয়র সরণি থানার মধ্যে সিবিআই আধিকারিকদের নিয়ে যাওয়া হয়৷ সিবিআই আধিকারিক তথাগত বর্ধনকে রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে যে আধিকারিকরা ছিলেন, তাঁদের সেক্সপিয়র সরণি থানার তুলে নিয়ে আনা হয়৷ পার্কস্ট্রিট থানা থেকেও সিবিআই আধিকারিকদেরও সেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ সিবিআই আধিকারিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তা পুলিশের তরফে জানানো হয়নি৷ কেন তাঁদের রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে কেন পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হল, তাও পুলিশের তরফে জানানো হয়নি৷ এদিনের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির খবর পেয়ে রাজীব কুমারের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী৷ এডিজি আইনশৃঙ্খলা রাজীব কুমারের বাড়িতে যান৷ পৌঁছান মেয়র ফিরহাদ হাকিম৷ সেখান থেকেই বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা৷ সংবিধান বাঁচাতে ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *