নয়াদিল্লি: সিআরপিএফ কনভয়ে ভয়াবহ আত্মঘাতী জঙ্গিহানায় তোলপাড় গোটা দেশ। এখনও পর্যন্ত এই হানায় ৩০জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। আহতের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। শহিদ জওয়ানদের বেশিরভাগকেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, কেননা বিস্ফোরণের অভিঘাতে তাঁদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে।
আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল মহম্মদের গাড়িতে ৩৫০ কেজি আইইডি ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এদিনের হামলা থেকে একটা বিষয়স্পষ্ট যে ভারতীয় উপমহাদেশে তথা ভূস্বর্গে আচমকাই নাশকতার ধরণ বদলে ফেলেছে পাক জঙ্গিরা, এই বিষয়টিই গোয়েন্দাদের চমকে দিয়েছে। বেশ কয়েক বছরে জঙ্গিরা বিশেষত লাদেন গাড়ি নিয়ে নাশকতার চালাচ্ছে পশ্চিমের দেশগুলিতে। প্রথম দিকে গাড়ি ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে হামলা চলত প্যালেস্টাইন ইজরায়েলের মতো দেশে। পরে তা ধীরে ধীরে নিউইয়র্কেও চলে আসে। এবার কাশ্মীরের সিআরপিএফের কনভয়ে চলল বিস্ফোরক বোঝাই লাদেন গাড়ির হামলা।
কেন গাড়ি নিয়ে নাশকতা? অভিজ্ঞতা বলছে, ভিড়ে জমজমাট এলাকায় যদি বিস্ফোরক বোঝাই অথবা খালিগাড়ি নিয়ে কিছু সশস্ত্র জঙ্গি ঢুকে পড়ে কয়েকজনকে পিষে দেয়।তাহলে আতঙ্ক ছড়ায় সবথেকে বেশি, বাঁচার আর্তি যখন সাধারণ জনতা ঘটনাস্থল থেকে পালাতে চাইছে তখন ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। এভাবেই নাশকতা চালিয়ে নিজেদের অভীষ্ট লক্ষ্য ছুঁতে পারে জঙ্গিরা। কখনও গাড়িতে বিস্ফোরক থাকে কখনও খালিগাড়ি নিয়েই হয় হামলা। এই হামলা চালাতে গেলে জঙ্গিদের খুব বেশি সতর্কতা অবলম্বনের দরকার নেই। গাড়িতে বিস্ফোরক ভরে ওপরে ভাল করে কাপড় বা অন্যান্য ভোগ্যপন্য বোঝাই করে নিলে খুব সহজেই পুলিশ ও তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দেওয়া যায়। একই সঙ্গে অনেক মানুষকে যন্ত্রণা দিয়ে মেরে ফেলার কাজটিও সুসম্পন্ন হয় আমেরিকায় শেষ কয়েকটি নাশকতায় এই পথ অবলম্বন করে সাফল্য এসেছে। তাই ভূস্বর্গকেই নতুন টার্গেট করেছিল জইশ ই মহম্মদ গোষ্ঠীর জঙ্গিরা। তারা সফল হয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ৩০জন জওয়ানের প্রাণ কেড়েছে। আহতর সংখ্যা ৫০ এর কাছাকাছি।
মূলত যে অঞ্চলে গাড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হামলার ছক কষা হয় সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে ঘাঁটি গেড়ে থাকে জঙ্গিরা,সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নিরাপত্তার কড়াকড়ি থেকে শুরু করে ট্রাফিক সবকিছুই খতিয়ে দেখা হয়। ট্রাফিক হালকা থাকলে তো লাভের গুড় জঙ্গিদের দিকেই যাচ্ছে।