নয়াদিল্লি: ভারত-পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সম্পর্কের অবনতি হয়েছে৷ পুলওয়ামা হামলা ও তার জবাবে দ্বিতীয় সার্জিকাল স্ট্রাইকের জেরে আরও তলানিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক৷ যেভাবে যুদ্ধের আবহ বিরাজ করছে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে, তাতে বর্তমানে দুই দেশই পরস্পরের সামরিক ক্ষমতাকে জরিপ করে চলেছে৷ এবার দেখে নেওয়া যাক, সামরিক শক্তিতে কতটা এগিয়ে ভারত?
ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এই মুহূর্তে রয়েছে সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান। এই টুইন ইঞ্জিন, মাল্টিরোল ফাইটার জেটটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ফাইটার জেটের অন্যতম। মূলত রাশিয়াতেই তৈরি এটি। এই যুদ্ধবিমান থেকে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার বন্দোবস্তের পর যুদ্ধবিমানটি গোটা বিশ্বের কাছেই সমীহের বিষয় হয়ে উঠেছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ মিসাইল ব্রহ্মস রয়েছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে। ব্রহ্মস ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি। বাতাসে শব্দের যা গতিবেগ তার চার গুণ বেগে লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুটে যেতে সক্ষম ব্রহ্মস। ফলে র্যাডারে ধরা পড়লেও মাঝ পথে তাকে রোখা খুব কঠিন।
ভারতীয় নৌবাহিনীর রয়েছে পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ আইএনএস চক্র। রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত লিজে নিয়েছিল এই নিউক্লিয়ার সাবমেরিন। এতে সংযুক্ত আছে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও টর্পেডো। এ ছাড়া শত্রুপক্ষের জলসীমায় গোপনে হানা দেওয়া, নজরদারি চালানো, অতর্কিতে হামলা চালানো এবং মাইন রেখে আসার সক্ষমতাও রয়েছে এই ডুবোজাহাজের।
আইএনএস চক্রেই অবশ্য শেষ নয়। তার চেয়েও অনেক শক্তিশালী এবং আধুনিক নিউক্লিয়ার সাবমেরিন এখন ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে। সেটির নাম হল আইএনএস অরিহন্ত। ভারতে তৈরি এই পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ হল ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন। শুধু টর্পেডো নয়, কে-৪-এর মতো সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে ৩৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে পরমাণু আক্রমণ চালাতে সক্ষম অরিহন্ত।
ফ্যালকন রাডার ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম উল্লেখযোগ্য সক্ষমতা। ইজরায়েলে তৈরি এই ফ্যালকন রাডার সিস্টেম পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী বা সক্ষম রাডারগুলির মধ্যে অন্যতম। ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানিং অ্যারে হল এই রাডারের অন্যতম বৈশিষ্ট। আকাশপথে প্রতিপক্ষের হামলা যে দিক থেকেই আসুক, এই রাডারের নজর এড়ানো কঠিন।
বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য শত্রুপক্ষকে সহজেই পরাজিত করতে সক্ষম। সুবিশাল এই রণতরী থেকে আক্রমণ চালিয়ে করাচির মতো বিরাট বন্দরকে অচল করে দিতে বেশ সময় লাগে না বলে ধারণা করা হয়। এই রণতরীর এয়ার উইং গঠিত হয়েছে মিগ-২৯ এবং তেজসের মতো যুদ্ধবিমান নিয়ে। অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার হেলিকপ্টারও থাকে আইএনএস বিক্রমাদিত্যে। এই রণতরী থেকে ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া যায়।
নাগ মিসাইল ক্যারিয়ার: বিশাল মরুপ্রান্তর দিয়ে যদি হানা দেয় শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক, তা হলে রুখে দেবে নাগ। অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম) নাগকে ভূমি এবং আকাশ, দুই জায়গা থেকেই ছোড়া যায়। প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্কই মূলত এই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য। লঞ্চিং প্যাড থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা ট্যাঙ্ককেও নিমেষে গুঁড়িয়ে দিতে পারে নাগ।
ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম ‘পৃথ্বী’ হল ভারতের অন্যতম সক্ষমতা। আকাশপথে আসা যে কোন ধরনের হামলার আগাম খবর রাডারে ধরা পড়া মাত্র এই মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয় হয়। যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টার বা ক্ষেপণাস্ত্র, যে কোনও লক্ষ্যবস্তুকে আকাশেই ধ্বংস করে পৃথ্বী।