নয়াদিল্লি: ১৯৭১ সাল থেকে প্রথমবার নিয়ন্ত্রণরেখা পার করল ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান৷ মঙ্গলবার ভোর ৩.৩০ নাগাদ জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হল৷ সূত্রের খবর, পুরো অপারেশনে নজর রাখেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ৪০ জন সিআরপিএফ সেনা জওয়ানকে হত্যা করা জইশ-ই-মহম্মদের, পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে বালাকোটের ঘাঁটিতে হামলা হয়। সূত্রের খবর, পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি, সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কঠোর বার্তা প্রয়োজন ভারতের।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, “পুলওয়ামা নিয়ে বৈঠকে ১২ বার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও একটি শক্তিশালী জবাব দেওয়ার কথা বলেছেন।’’ নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে বালাকোটে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবিরে ১,০০০ কেজি বোমা নিক্ষেপ করে ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। গত কয়েকদিনের গোয়েন্দা রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে, বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটিতে ৬টি বোমা ফেলে জইশ প্রধান মাসুদ আজাহারের শ্যালক ইউসুফ আজাহার সহ ৩০০ এরও বেশি জঙ্গিকে নিকেশ করে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান মিরাজ ২০০০। আত্মঘাতী বোমারুদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত ক্যাম্পে।
এই হামলা চালাতে দেড় মিনিট সময় লাগে এবং কোনও ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই ১৯ মিনিটের অপারেশন শেষ করে যুদ্ধবিমানগুলি ফিরে আসে। আধিকারিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, সেই সময় ক্যাম্পের বেশীরভাগই ঘুমোচ্ছিল৷ পাকিস্তানী প্রতিরক্ষা বিভাগের কাছে এমন কোনও তথ্য ছিল না, যে তাদের দেশের এতটা ভিতরে ঢুকে হামলা হবে, কারণ, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের আশঙ্কা করেছিল তারা। কিন্তু ভারতের কাছে তথ্য আসে, বালাকোট ক্যাম্পে বহু জঙ্গি, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষকদের নিয়ে এসেছে জইশ, সেখানে ৫০০ থেকে ৭০০ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এমনকী, সুইমিং পুল ও রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, একই সময়ে বিভিন্ন বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানগুলি রওনা দেয়, ফলে ধন্দে পড়ে যায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগের আধিকারিকরা।