যে স্লোগান দেশের রাজনীতিকে ওলট-পালট করে দিয়েছে, ১৯৬৫-২০১৯

নয়াদিল্লি: চলছে ভোট৷ দিল্লি দখলের লক্ষ্যে প্রাণপাত করছে শাসক থেকে বিরোধী দল৷ চলতি ভোটের মরশুমে দেশ কিংবা বঙ্গ রাজনীতিতে দানা বাঁধেছে স্লোগান বিতর্ক৷ সম্প্রতি, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ঘিরে বাংলার রাজনীতিতে ঝড় তুলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী৷ পাল্টা দিতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী৷ ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে বেশ সরগরম স্লাগান রাজনীতি৷ কিন্তু, এই স্লোগানই একাধিক বার ভারতীয় রাজনীতিকে ওলট-পালট করে দিয়েছে৷

e9e164f490e147c58922be1b8b93bca4

যে স্লোগান দেশের রাজনীতিকে ওলট-পালট করে দিয়েছে, ১৯৬৫-২০১৯

নয়াদিল্লি: চলছে ভোট৷ দিল্লি দখলের লক্ষ্যে প্রাণপাত করছে শাসক থেকে বিরোধী দল৷ চলতি ভোটের মরশুমে দেশ কিংবা বঙ্গ রাজনীতিতে দানা বাঁধেছে স্লোগান বিতর্ক৷ সম্প্রতি, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ঘিরে বাংলার রাজনীতিতে ঝড় তুলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী৷ পাল্টা দিতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী৷ ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে বেশ সরগরম স্লাগান রাজনীতি৷ কিন্তু, এই স্লোগানই একাধিক বার ভারতীয় রাজনীতিকে ওলট-পালট করে দিয়েছে৷ ভারতের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক স্লোগান অবশ্যই ‘বন্দেমাতরম্’। স্বাধীনতার আগে ‘দিল্লি চলো’ কিংবা ‘স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার’ এমন সব স্লোগান থাকলেও সেরা অবশ্যই ছিল বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দেমাতরম্’। কিন্তু স্বাধীনতার পরে! দেখে নেওয়া যাক-

জয় জওয়ান জয় কিষাণ: ১৯৬৫ সালে চিনের সঙ্গে যুদ্ধের পরে এই স্লোগান এনেছিলেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী। দেশপ্রেমের সঙ্গে সবুজ বিপ্লবের মিশেল।

গরিবি হঠাও: ১৯৭১ সালে এই স্লোগানের প্রবক্তা ইন্দিরা গান্ধী। সেবার কংগ্রেসের জয়ের পিছনে বড় ভূমিকা ছিল দেশের দারিদ্র কমানোর এই স্লোগান।

ইন্দিরা হঠাও, দেশ বাঁচাও: জরুরি অবস্থার পরে ৭৭ সালের নির্বাচনের আগে এই স্লোগান বানালেন জয়প্রকাশ নারায়ণ। ইন্দিরার ‘গরিবি হঠাও’-কে কটাক্ষ করা স্লোগান সাফল্যও দেয়।

যব তক সুরয চাঁদ রহেগা, ইন্দিরা তেরা নাম রহেগা: ১৯৮৪ সালে আততায়ীর হাতে ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পরে এই স্লোগান তোলে কংগ্রেস। দেশ জুড়ে তৈরি হওয়া করুণ-স্রোত নির্বাচনেও ডিভিডেন্ড দেয়।

বারি বারি সবকি বারি, আবকি বারি অটলবিহারী: দীর্ঘ কংগ্রেস শাসনের পরে প্রথমবার বিজেপিকে ক্ষমতায় এনে দিল এই স্লোগান। সালটা ১৯৯৬। সরকার টিকেছিল ১৩ দিন।

জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান: ১৯৯৮ সালে পোখরানে পারমাণবিক বিস্ফোরণের পরে এই স্লোগান তৈরি করেন অটলবিহারী বাজপেয়ী।

কংগ্রসকে হাত, আম আদমি কে সাথ: ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের স্লোগান। সে বার কাজে দিলেও ১০ বছর পরে ২০১৪ সালে এই স্লোগান আর নির্বাচনী তরী পার করাতে পারেনি।

মা-মাটি-মানুষ: গোটা দেশের নয়। একটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের স্লোগান। তবু জাতীয় স্লোগানের তালিকায় জায়গা করে নিল। তৃণমূল কংগ্রেস ‘মা-মাটি-মানুষ’-এ ভর করেই তিন দশকের বাম শাসনে বদল আনে পশ্চিমবঙ্গে।

ম্যায় অন্না হুঁ: ২০১১ সালে জন লোকপাল বিলের দাবিতে অনশনে বসলেন অন্না হজারে। দেশ জুড়ে তৈরি হয় এক আন্দোলন। তৈরি হল নতুন স্লোগান। শুধু মুখে নয়, গাঁধি টুপিতেও লেখা হল ‘ম্যায় অন্না হুঁ’।

আবকি বার মোদি সরকার: ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। বিজেপি নতুন স্লোগান নিয়ে এল। ঠিক নতুন নয়, বাজপেয়ীর সময়ের স্লোগানই একটু অন্য রকম করে হল। নির্বাচনী স্লোগানটির সাফল্য বলার অপেক্ষা রাখে না।

কশ্মীর মাঙ্গে আজাদি: ২০১৬ সালে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কশ্মীর মাঙ্গে আজাদি’ স্লোগানের রাতারাতি শিরোনামে উঠে আসেন কানাইয়া কুমার৷ এই স্লোগান দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাও দায়ের হয় কানাইয়ার বিরুদ্ধে৷

মোদি হঠাও, দেশ বাঁচাও: চলতি লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র সরকার গঠনের লক্ষ্যে ‘মোদি হঠাও’-এর ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী৷ গোটা দেশজুড়ে তার প্রভাবও পড়েছে৷

চৌকিদার চোর হে: ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এই স্লোগান তুলে দেশজুড়ে ঝড় তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ ‘রাফাল দুর্নীতি’ প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধীই এই স্লোগানকে জনপ্রিয় করে তোলে৷

এ ছাড়াও দেশের রাজনীতিতে বেশ চর্চিত ‘অচ্ছে দিন’ কিংবা ‘সবকা সাথ সবকে বিকাশ’৷ চলতি ভোটে বিজেপির তরফে ‘অজেয় ভারত, অটল বিজেপি’ এই স্লোগান তোলা হলেও তা খুব একটা চলেনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *