মতাদর্শে নয়, ক্ষমতার লড়াইয়ে জিতেছেন মোদি: অমর্ত্য সেন

নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদির জয়কে কটাক্ষের সঙ্গে ব্যাখ্যা করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন, অনেকেই বিজেপি’র এই জয়কে কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে ‘আদর্শিক যুক্তির’ জয় বলে বিবেচনায় পছন্দ করতে পারেন। তবে, এটা হিন্দু জাতীয়তাবাদী দর্শনের জন্য কোনও বিশেষ জয় নয়। আবার গান্ধী, নেহরু এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সার্বিক অংশগ্রহণ ও ঐক্যের ধারণাকে বিজয়ী করেছিলেন, তার কোনও

মতাদর্শে নয়, ক্ষমতার লড়াইয়ে জিতেছেন মোদি: অমর্ত্য সেন

নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদির জয়কে কটাক্ষের সঙ্গে ব্যাখ্যা করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন, অনেকেই বিজেপি’র এই জয়কে কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে ‘আদর্শিক যুক্তির’ জয় বলে বিবেচনায় পছন্দ করতে পারেন। তবে, এটা হিন্দু জাতীয়তাবাদী দর্শনের জন্য কোনও বিশেষ জয় নয়। আবার গান্ধী, নেহরু এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সার্বিক অংশগ্রহণ ও ঐক্যের ধারণাকে বিজয়ী করেছিলেন, তার কোনও লক্ষণীয় পরাজয় নয়।

লোকসভা নির্বাচনের জনাদেশ নিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় এক নিবন্ধে অমর্ত্য সেন বলেছেন, আমাদের বারংবার বলা হয় ভারত বদলে গিয়েছে, মোহনদাস গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জওহরলাল নেহরু, মৌলনা আবুল কালাম আজাদের মতো কংগ্রেস ও ভারতের মহান নেতাদের বহুত্ববাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার মতাদর্শ আজ আর কোনও কার্যকরী বিকল্প নয়। তিনি বলেছেন, বিজেপি’র গত পাঁচ বছরে যা যথেষ্ট স্পষ্ট, তা হলো, ধর্মের ভিত্তিতে আরও বিভক্ত হয়েছে ভারত। সংখ্যালঘু মানুষ, বিশেষত মুসলিমদের জীবন আরও প্রবলভাবে বিপজ্জনক হয়েছে। ক্ষমতার মানদণ্ডে হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কিছু পেয়েছে ঠিকই, তবে বিশেষ করে মতাদর্শের সংগ্রামে পায়নি কিছুই। বিজেপি কর্মী প্রজ্ঞা ঠাকুর সম্প্রতি মোহনদাস গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে একজন দেশপ্রেমিক বলেছেন। এতে এমনকি বিজেপি’ও অস্বস্তিতে পড়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। যাইহোক, মধ্যপ্রদেশের যে আসনের জন্য ঠাকুর প্রচার করছিলেন, সেখানে তিনি জিতেছেন এবং ভারতীয় সংসদে তিনি হবেন একজন সাংসদ। এই জয় ক্ষমতার মানদণ্ডে জয়, মতাদর্শের সংগ্রামে নয়।

মোদির জয়ের কারণগুলি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেছেন, একজন অগ্নিগর্ভ বক্তা, যিনি ঘৃণা ও বিদ্বেষকে রাজনীতিতে ব্যবহার করে অন্যের চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পেরেছেন। নির্বাচনী প্রচারে ঢেলেছেন দেদার অর্থ, যা কংগ্রেস ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির চেয়ে বহুগুণ বেশি। সেইসঙ্গেই অতিরিক্ত হিসাবে পেয়েছেন একতরফা মিডিয়া কভারেজ। মে মাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রাষ্ট্রের মালিকানাধীন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, দূরদর্শন শাসক বিজেপি’কে দিয়েছে কংগ্রেসের তুলনায় দ্বিগুণ সময়। ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদীদের হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মোদীর বিমান হামলার নির্দেশে যে জাতীয়তাবাদের উত্থান হয়েছে, তা-ও ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে বিজেপি’কে। বস্তুত, ভারতের সাধারণ নির্বাচনে যে আতঙ্কবাদ দাপিয়ে বেরিয়েছে, তাকে সুচারুভাবে ব্যবহার করেছেন মোদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − three =