আজ বিকেল: সমকামী বলে যে যখন পারত অপমান করতে, বাড়ির লোকজনও সুযোগ পেলে কথা শোনাতেন। পরিচিতমহলে ঠাট্টার শিকার হওয়া ছিল দৈন্দিন বিষয়। কিন্তু কাঁহাতক আর সহ্য করা যায়। তাইতো মৃত্যুকেই বেছে নিলেন চেন্নাইয়ের সমকামী যুবক অভিন্সু পটেল। সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন তিনি। ভেসে এল দেহ, ফেসবুকে লিখে গেলেন নিজের যন্ত্রণার কাহিনী।
সোমবার রাত থেকে অভিন্সুর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশে অভিযোগ করেন তাঁর বাবা-মা। পুলিশ খোঁজ করতে গিয়ে অভিন্সুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দেখে। আর সেখান থেকেই ছবিটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কয়েকদিন আগে ফেসবুকে একবার হিন্দি ও একবার ইংরেজিতে দুটো পোস্ট লিখেছেন ১৯ বছরের ওই যুবক। হিন্দিতে তিনি লিখেছেন, “আমি একজন ছেলে, সবাই সেটা জানে। কিন্তু আমার হাঁটা-চলা, চিন্তা ভাবনা, কথা বলা সব মেয়েদের মতো। এটা এমন জিনিস যা ভারতের মানুষ বুঝবে না।” তারপর আবার ইংরেজিতে অভিন্সু লেখেন, “যে সব দেশ সমকামী ও রুপান্তরকামীদের সম্মান দেয়, সেইসব দেশের প্রতি আমি গর্বিত। ভারতেও যে সব মানুষ আমাদের সমর্থন করেন, তাঁদের প্রতি আমি গর্বিত। আমি সমকামী এটা আমার অপরাধ নয়। এটা ভগবানের ভুল। আমি আমার জীবনকে ঘৃণা করি।”
মূলত নিখোঁজের ঘটনা নিয়ে অভিন্সুর পরিবারের কেউই কোনও পথ দেখাতে পারেননি। তাই ফেসবুক পোস্টটি নিয়েই খড়ের গাদায় সূচ খুঁজতে শুরু করে। তখনই স্থানীয় ইক্কামবক্কমের সৈকতে একটি দেহ ভেসে এলে অভিন্সুর বাবা-মাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর ছেলের দেহ শনাক্ত করেন। ছেলে যে আত্মঘাতী হতে পারে তা বুঝতে পারেননি বাবা-মা। কিন্তু তাঁর ফেসবুক পোস্ট দেখার পরেও ওই যুবকের আত্মীয়রা কেন কোনও প্রতিক্রিয়া দিলেন না বা যুবকের সঙ্গে কথা বললেন, তানিয়ে বেশ চিন্তিত পুলিশ। কে বা কারা অভিন্সুকে আত্মঘাতী হওয়ার পথ বেছে নিতে বাধ্য করলেন তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। গোটা ঘটনায় হতবাক অভিন্সুর বন্ধুরা। মুখে কুলুপ এঁটেছে পরিবারের লোকজন।