অবশেষে জম্মু-কাশ্মীরের শাসন ক্ষমতা ছিনিয়ে নিল কেন্দ্র, মিটবে সমস্যা?

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা বিতর্কে সরাসরি জল ঢেলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ বিপুল জনসমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর এবার বড়সড় সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ বেআইনি কার্যকলাপ দমন আইন ২০১৯ বা ইউএপিএ সংশোধনী বিল পাস করিয়ে এবার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে

অবশেষে জম্মু-কাশ্মীরের শাসন ক্ষমতা ছিনিয়ে নিল কেন্দ্র, মিটবে সমস্যা?

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা বিতর্কে সরাসরি জল ঢেলে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ বিপুল জনসমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর এবার বড়সড় সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ বেআইনি কার্যকলাপ দমন আইন ২০১৯ বা ইউএপিএ সংশোধনী বিল পাস করিয়ে এবার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্র৷ ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ায় উত্তাল সংসদ৷

আজ বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদের মধ্যে রাজ্য সভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জামান, জম্মু ও কাশ্মীর আইনসভা দ্বারা পরিচালিত কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হবে৷ লাদাখ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হলেও থাকবে না কোনও আইনসভায়৷ এদিন জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের কেন্দ্রের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, এখন থেকে জম্মু-কাশ্মীর ৩৭০ ধারা ধেরে মুক্ত করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মর্যাদা পেতে চেলেছে৷

কাশ্মীর সমস্যায় মেটাতে জারি হওয়া ৩৭০ ধারা কী? ৩৭০ ধারা সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৪৯ সালের ১৭ অক্টোবর৷ এই ধারা জারি করে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতীয় সংবিধানের আওতামুক্ত রাখা হয়৷ ওই বিশেষ ধারাবলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে নিজস্ব সংবিধানের খসড়া তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল৷ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতকে ভারত ও পাকিস্তানে বিভাজন করে ভারতীয় সাংবিধানিক আইন কার্যকর হওয়ার সময়কাল থেকেই ভারতভুক্তির বিষয়টি কার্যকরী হয়৷ ভারতভুক্তি হওয়ার শর্ত হিসেবে জম্মু কাশ্মীরে সংসদ প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ তিনটি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে ক্ষমতাধর৷ কাশ্মীরের ভারতভুক্তির ৫ নং উপধারায় জম্মু ও কাশ্মীরের রাজা হরি সিং উল্লেখ করে দিয়েছিলেন, তাঁর সম্মতি ছাড়া ভারতের স্বাধীনতা আইনে রাজ্যের ভারতভুক্তি কোনও সংশোধনী আইনের মাধ্যমে বদলানো যাবে না৷ ৭ নং উপধারায় বলা ছিল, এই ভারতভুক্তির শর্তাবলী ভবিষ্যৎ কোনও সংবিধানের মাধ্যমে বদলাতে বাধ্য করা যাবে না।

কীভাবে ভারতভুক্তি হল জম্মু ও কাশ্মীর? রাজা হরি সিং প্রাথমিক ভাবে স্থির করেছিলেন তিনি স্বাধীন থাকবেন৷ সেই মতো ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে স্থিতাবস্থার চুক্তি স্বাক্ষর করেন৷ পাকিস্তান সে চুক্তিতে স্বাক্ষরও করে৷ কিন্তু পাক সেনা যখন জম্মু ও কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে, তখন রাজা হরি সিং ভারতের সাহায্য চান৷ শেষপর্যন্ত কাশ্মীরের ভারতভুক্তি হয়৷ ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর হরি সিং ভারতভুক্তির চুক্তি স্বাক্ষর করেন৷ ২৭ অক্টোবর ১৯৪৭ গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটেন সে চুক্তি অনুমোদন করেন৷ কাশ্মীরের ভারতভুক্তি যে সাময়িক সিদ্ধান্ত, তা ১৯৪৮ সালে জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কিত শ্বেত পত্রে ঘোষণা করে ভারত৷ ১৭ মে ১৯৪৯ সালে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাকে একটি চিঠি লেখেন৷ সে চিঠিতে তিনি জানান, ভারত সরকারের স্থির সিদ্ধান্ত হল জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান সে রাজ্যের অধিবাসীদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়৷ সেই মতামতের প্রতিনিধিত্ব বহন করার উদ্দেশ্যেই গণপরিষদ গঠিত হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − seven =