নয়াদিল্লি: চতুর্থ বাঙালি হিসেবে ভারতরত্ন সম্মান পেলেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির হাতে দেশের সেরা সম্মান তুলে দেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার অধ্যক্ষ-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব৷
একই আজ ভূপেন হাজারিকা ও নানাজি দেশমুখকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়৷ যদিও, প্রণবের এই সম্মান পাওয়া নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি৷ আদ্যান্ত কংগ্রেস ঘরনার এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ভারতসেরার সম্মান পাওয়ার জন্য আরএসএসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছেন বলে অভিযোগ৷ তবে তিনি জানিয়েছেন, ভারত সরকার যে সম্মান নিয়েছে, আমি অত্যন্ত গর্বিত৷
বিধানচন্দ্র রায়ের পর এই প্রথম দেশের সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন কোনও বাঙালি রাজনীতিক৷ এই দুই জন ছাড়াও বাঙালিদের মধ্যে ভারতরত্ন পেয়েছেন সত্যজিৎ রায়, রবিশঙ্কর, অমর্ত্য সেন ও অরুণা আসফ আলি৷ কলকাতায় বাঙালি হয়ে ওঠা মাদার টেরেসাও পান এই স্বীকৃতি৷
Delhi: Former President Pranab Mukherjee receives ‘Bharat Ratna’ from President Ram Nath Kovind. pic.twitter.com/j9VmBbNEoP
— ANI (@ANI) August 8, 2019
Delhi: Former President Pranab Mukherjee greets Prime Minister Narendra Modi and Vice President Venkaiah Naidu after receiving ‘Bharat Ratna’ from President Ram Nath Kovind. pic.twitter.com/x3IgUN831d
— ANI (@ANI) August 8, 2019
প্রণব মুখোপাধ্যায় একাধিক সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৮৪ সালে ‘ইউরোমানি’ পত্রিকার সমীক্ষায় তাঁকে ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী’ বলা হয়েছিল। ২০১০ সালে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের দৈনিক সংবাদপত্র ‘এমার্জিং মার্কেটস’ তাঁকে ‘ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়ার ফর এশিয়া’ পুরস্কার দিয়েছিল। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে, ‘দ্য ব্যাঙ্কার’ পত্রিকা তাঁকে ‘ফাইনান্স মিনিস্টার অফ দ্য ইয়ার্স’ সম্মান দিয়েছিল। ভারত সরকার ২০০৮ সালে তাঁকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মবিভূষণ’ প্রদান করে। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ পান।
২০১৮-র ১৬ জানুয়ারি তাঁকে সম্মাননাসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়৷ ২০১১ সালে উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টর অফ লেটারস ডিগ্রি দেয়৷ ২০১২ সালের মার্চ মাসে অসম
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বেশ্বরায়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি. লিট ডিগ্রি দেয়৷ ২০১৩ সালের ৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট অফ ল ডিগ্রি দেয়৷ ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ মরিশাস বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডক্টর অফ ল সম্মান দেয়৷ শিবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-কে সাধারণ (আইআইইএসটি) ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণার একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৪ সালে জাতীয় গুরুত্বের প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৮৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানের নাম আইআইইএসটি রাখার আগে ছিল ‘বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি (বেসু)৷ এস কে জোশী কমিটির সুপারিশ মেনে বেসু-সহ দেশের ৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়কে আইআইইএসটি করার প্রস্তাব দেয় আনন্দ কৃষ্ণন কমিটি৷ তারপর রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে বিষয়টি দ্রূত রূপায়ণের অনুরোধ করেন৷