চিদাম্বরমকে জেলে পাঠাতে বড়সড় ভূমিকা রয়েছে এই বাঙালি বধূর!

নয়াদিল্লি: পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতে কেন্দ্রের প্রাক্তন অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম৷ তাঁর বিরুদ্ধে আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় ৩০৫ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে৷ কিন্তু জানেন কি, চিদাম্বরমকে জেলের ঘানি টানানোর পেছনে বড়সড় হাত রয়েছে এক বাঙালি বধূর! বিষয়টি জানতে একটু পিছনে চলে যেতে হবে৷ সালটা ছিল ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ৷ আইএনএক্স মিডিয়ায় ৩০৫ কোটি

চিদাম্বরমকে জেলে পাঠাতে বড়সড় ভূমিকা রয়েছে এই বাঙালি বধূর!

নয়াদিল্লি: পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতে কেন্দ্রের প্রাক্তন অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম৷ তাঁর বিরুদ্ধে আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় ৩০৫ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে৷ কিন্তু জানেন কি, চিদাম্বরমকে জেলের ঘানি টানানোর পেছনে বড়সড় হাত রয়েছে এক বাঙালি বধূর!

বিষয়টি জানতে একটু পিছনে চলে যেতে হবে৷ সালটা ছিল ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ৷ আইএনএক্স মিডিয়ায় ৩০৫ কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়৷ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের ছাড়পত্রের গড়িমসির ও আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে সিবিআই মামলা রুজু করে৷ সেই প্রথম চিদাম্বারাম ও তাঁর ছেলে কার্তি চিদাম্বরমের নাম জড়িয়ে যায়৷ ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রথম মামলা ওঠে৷ আইএনএক্স মিডিয়া বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন চিদাম্বরম৷ গত ২০০৮ সালে ৬ মার্চ কার্তি চিদাম্বরমকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই৷ ১২ দিনের হেফাজতে রাখা হয় তাঁকে৷

এরপর ওই মামলায় ছেলে কার্তিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাবা পি চিদাম্বরমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৎপরতা শুরু করে সিবিআই৷ এরপর চিদাম্বরম জামিনের আর্জি জানালেন দিল্লি হাইকোর্ট৷ তা মঞ্জুর হয়৷ ইডি ও সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জুলাই ২০১৮ সালে দিল্লি হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী জামিন পান পি চিদাম্বরম৷ পরে সিবিআই মামলা তদন্তে নেমে জানতে পারে শিনা বোরা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত তথা আইএনএক্স মিডিয়ার কর্ণধার ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে চিদাম্বরমের একটি বৈঠক ঘিরে দানা বাঁধে জল্পনা৷

২০১৯ সালের ১১ জুলাই ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আবেদন করেন৷ সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআই ইন্দ্রানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে৷ সূত্রের খবর, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে জেরা করে চিদাম্বরমের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে৷ ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি আইএনএক্সস নিউজের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আনতে চেয়েছিলেন সুইডেন থেকে৷ কিন্তু অনুমতি না পেয়ে চিদাম্বরমের দ্বারস্থ হন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়৷ চিদাম্বরমের সঙ্গে সাক্ষাত করান এক বিশিষ্ট সাংবাদিক৷ সেই সূত্রে ইন্দ্রাণী চিদাম্বরমের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ সেই বৈঠকে আইএনএক্স মিডিয়ার জন্য বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়ার আশ্বাস দেন চিদাম্বরম৷ কিন্তু শর্ত রাখেন তিনি৷ ছেলে কার্তি চিদাম্বরম নতুন ব্যবসায় নেমেছে বলে ইন্দ্রাণীকে তিনি আবেদন করেন, যাতে তাঁর ছেলে কার্তিকের ব্যবসা সাহায্য করেন তারা৷ এই শর্তে বিদেশ থেকে লগ্নি আনার অনুমতি পান ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়৷

অভিযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ আনার ছাড়পত্রের তুলনায় বেশি পরিমাণ টাকা ভারতে আনার অভিযোগে আয়কর দপ্তর নজরে আসে৷ আয়কর হানার পর কার্তি চিদাম্বরমের সহযোগিতা চান ইন্দ্রাণীর৷ অভিযোগ, ওই সময় কার্তি ইন্দ্রাণীর থেকে ১০ হাজার মার্কিন ডলার সাহায্য চান, আয়কর হানা রুখতে৷ তদন্তে নেমে আয়কর দপ্তর জানতে পারে বিদেশী লগ্নির অনুমোদনের থেকেও বেশি পরিমাণ অর্থ আনা হয়েছে দেশে এরপরই বিষয়টির তদন্তের নামে ইডি৷ শিনা বোরা হত্যাকাণ্ড মামলায় সিবিআই তদন্তের মাঝপথেই আইএনএক্স মামলার তদন্ত শুরু করে৷ সেই সুবাদে চিদাম্বরমের সন্ধান পান তাঁরা৷ এরপর রাজসাক্ষী ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পি চিদাম্বরমকে তলব করে সিবিআই৷ সহযোগিতা না করার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 − 1 =