আলগা হচ্ছে ভোটব্যাঙ্ক? মমতার নিশানায় কেন ‘দালাল’ ওয়াইসি?

কলকাতা: বাংলার মুসলিম সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রামবাংলায় প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে ভিন্ রাজ্যের সংগঠন৷ একদিকে লাগামছাড়া বিজেপির উত্থান, অন্যদিকে তৃণমূলের প্রধান ভোট বাক্সে চওড়া বিভাজন! ২১-এর লক্ষ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার যুদ্ধ ঘোষণার আগে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জেলা সফরে দু’দুটি সভা থেকে এনআরসি থেকে মুসলিম সমাজারে ভোটবাক্সের লাগাম নিজের হাতে ধরে

আলগা হচ্ছে ভোটব্যাঙ্ক? মমতার নিশানায় কেন ‘দালাল’ ওয়াইসি?

কলকাতা: বাংলার মুসলিম সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রামবাংলায় প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে ভিন্ রাজ্যের সংগঠন৷ একদিকে লাগামছাড়া বিজেপির উত্থান, অন্যদিকে তৃণমূলের প্রধান ভোট বাক্সে চওড়া বিভাজন! ২১-এর লক্ষ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার যুদ্ধ ঘোষণার আগে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জেলা সফরে দু’দুটি সভা থেকে এনআরসি থেকে মুসলিম সমাজারে ভোটবাক্সের লাগাম নিজের হাতে ধরে চেষ্টা চালালেন দলনেত্রী৷

কোচবিহারের পর মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির সভামঞ্চে থেকেও ভিন রাজ্যের মুসলিম সংগঠনকে কড়া বার্তা তৃণমূল নেত্রীর৷ আজ সভামঞ্চ থেকে থেকে নাম না করে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল বা এআইএমআইএমকে আক্রমণ শানিয়ে নেত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘কেউ ভয় পাবেন না৷ বাংলায় এনআরসি হবে না৷ কেউ কেউ হায়দ্রাবাদ থেকে টাকার থলি ভরে টাকা নিয়ে এসেছে মিটিং করে বলছে, আমরা তোদের জন্য লড়ব৷ কী করবে তোমরা লড়বে? তোমরা তো বিজেপি সবথেকে বড় দালাল৷ আমরাই লড়ব, যারা বেঁচে আছি৷ যারা লড়াই করছে, যারা লড়াই শক্তি আছে৷’’ পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতাকে বিশ্বাস করেন না বলেও মন্তব্য করেন মমতা৷ এআইএমআইএমকে বিজেপির দালালরা বলেও কটাক্ষ করেন মমতা৷ বাইরের লোকের কথা শুনবেন না বলেও সংখ্যালঘু প্রভাবিত সাগরদিঘি থেকে ঘোষণা করেন৷

সোমবার কোচবিহারে কর্মিসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, হিন্দুদের যেমন উগ্রপন্থা আছে৷ কিছু সংখ্যালঘুদের মধ্যেও উগ্রপন্থা বেরিয়ে গিয়েছে এখন৷ ওরা বাংলায় এসে মিটিং করে বলছে, মুসলিমদের পাশে আছে৷ কিন্তু, ওরা বিজেপি টাকা নিয়ে বাংলায় বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে৷

আলগা হচ্ছে ভোটব্যাঙ্ক? মমতার নিশানায় কেন ‘দালাল’ ওয়াইসি?

এর পাল্টা দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল বা এআইএমআইএমের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি৷ সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘এই ধরনের মন্তব্য করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মুসলিমদের তোষণ করার চেষ্টা করছেন৷ আমার মনে হয়, বাংলার মুসলমানরা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই তোষণ নীতির জবাব দেবেন৷ আমার মনে হয়, মুখ্যমন্ত্রী ইফিতার দেওয়া, দোওয়া করা বন্ধ করে দিন৷ এটা বাংলার মুসলিমরা ভালো ভাবে মেনে নেন না৷ আমাদের খুব ভালো প্রস্তুতি চলছে বাংলায়৷ লোকজন কাজ করছে৷ এটাই তো আমার প্রশ্ন, আমি যখনই মুসলিমদের কথা বলিছি, তখন আমাকে বিজেপি বলা হচ্ছে কেন?’’

শুরুটা হয়েছিল সোমবার৷ কোচবিহারে দলীয় কর্মীদের সভা থেকে নাম না করে আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার তার পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি এমআইএস প্রধান৷ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি৷ মূলত হায়দ্রাবাদ ভিত্তিক দল অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল বা এআইএমআইএম৷ওয়াইসি নিজে হায়দ্রাবাদি৷ সংসদও৷ তাঁর ভাই আকবরউদ্দিন ওয়াইসি তেলেঙ্গানার বিধায়ক৷ বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন তিনি৷ উস্কানিমূলক মন্তব্য করারও অভিযোগ উঠেছে ওয়াইসির ভাইয়ের বিরুদ্ধে৷ কিন্তু সাম্প্রতিককালে হায়দ্রাবাদের বাইরে জমি তৈরির কাজ শুরু করেছে ওয়াইসির দল৷ মুসলিমদের সম্পর্কিত নানা বিষয়ে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে দেখা গিয়েছে তাঁদের৷

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে সবাইকে চমকে দিয়ে মহারাষ্ট্রে ঔরঙ্গবাদ লোকসভা আসন থেকে জয়ী হন ওয়াইসি৷ মহারাষ্টে ৪টি আসন পেয়েছে তারা৷ সম্প্রতি বিহারের কৃষ্ণগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে ওয়াইসির দল৷ মূলত বিজেপির কড়া সমালোচক হলেও বারবার তাঁর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ এবার সেই ওয়াইসির দলের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে৷ পর্যবেক্ষক মহলের ধারনা, ওয়াইসি দল যদি এখানে তাদের প্রভাব বাড়াতে থাকে, তাহলে তৃণমূলের ভোটেও তার প্রভাব পড়তে পারে৷ কেনন, বাংলার ৩৮ শতাংশ আসনের ভাগ্য নির্ধরিত হয় সংখালঘুদের ভোট৷ ফলে সেই ভোটে যদি ওয়াইসিরা ভাগ বসাতে থাকে, তাহলে ২১ স্বপ্ন মাঠেমারা হওয়ার আশঙ্কা থাকছে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =