নয়াদিল্লি: স্যোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকাটা তৃতীয় বিশ্বের সেলেবদের কাছে একটা আলাদাই মাত্রা বহন করে৷ তবে এই জনপ্রিয়তা যখন নেশায় পরিনত হয় তখন তার জন্য কৌশল অবলম্বন করতে হলেও পিছপা হন না অনেকেই৷ আর এই তালিকায় বছর দুয়েক আগেই নাম তুলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ আর হয়তো এক্ষেত্রেই 'ফেকুজি' নামের যথার্থতা খুঁজে পেয়েছেন দেশের মোদি বিরোধিরা৷ আসলে তাঁর ডিজিটাল বিষয়ে যে বরাবরই একটা বিশেষ আকর্ষণ আছে সে সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের সকলেই অবগত৷
কারণ মোদিজি নিজেই জানিয়েছেন যে ১৯৮৮ সালে উনি ইমেইল করেছেন৷ যদিও ভারতে ইমেল ব্যবহার শুরু হয় ১৯৯৫ সালে৷ তবে এনিয়ে কোনো ব্যাখ্যা এযাবৎ তিনি দিয়েছেন কিনা জানা নেই৷ তবে তাঁর এই ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রতি অমোঘ আকর্ষণের ফলেই হয়তো ডিজিটালি পপুলার হওয়ার আকাঙ্খাও বেশি৷ সুদূর অতীতে যাই হয়ে থাক, ২০০৯- সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই কিন্তু টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি৷ গত লোকসভা নির্বাচনের আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮-সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই টুইটার অ্যাকাউন্টে ফলোয়ারের সংখ্যা যখন বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতাদের ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠছিল৷
তখন সেবছরই মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম টুইপল্যামেসি যারা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সরকারগুলিকে তাদের ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজি উন্নত করতে সহায়তা করে হঠাৎ করেই দাবি করে যে টুইটারে মোদির এই জনপ্রিয়তা কিছু ভুতুড়ে অ্যাকাউন্টের দৌলতে এবং মোট ফলোয়ারের ৬০ শতাংশই ভুতুড়ে বা নকল৷ এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সেবছর ১১ জুলাই টুইটারের তরফে ঘোষণা করা হয়, ফেক অ্যাকউন্টের বিরুদ্ধে তারা বড়সড় অভিযানে নামছে৷ ব্যাস্, আর দেখে কে? এক ধাক্কায় মোদির ফলোয়ারের সংখ্যা কমে যায় ২ লক্ষেরও বেশি, যা রীতিমত চোখে পড়ার মতো৷
আসলে এক ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই এই ভুতুড়ে ফলোয়ার তৈরি করা যায়৷ যা দিয়ে টুইটার অ্যাকাউন্টকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় ভায়া টুইটার এপিআইয়ের মাধ্যমে৷ যার ফলে ফলো করা, রিটুইট করা, কাউকে টুইটে মেনশন করা এগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে থাকে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টুইটার এই ধরনের অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে এর আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছিল৷ অবশ্য লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ফের পুরোনো ছন্দে ফিরে আসে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টের ফলোয়ার বৃদ্ধির হার৷
২০১৯-এর সেপ্টেম্বর গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে ফলোয়ার সংখ্যা পৌঁছে গেছে ৬ কোটিতে৷ এর একমাসের মধ্যে ইনস্টাগ্রামেও তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় তিন কোটি৷ এক্ষেত্রে আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকেও পিছনে ফেলে দেন মোদি৷ সুতরাং, যারা স্যোশাল মিডিয়ায় ফলোয়ারের সংখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের তুল্যমূল্য বিচার করতে অভ্যস্ত এমনকি দেশের এই সামগ্রিক অস্থিরতার মধ্যেও তারা অবশ্যই 'ফেক ফলোয়ার' কথাটাও মাথায় রাখবেন৷