৫০ শতাংশ বাড়ল সব্জির দাম, সাড়ে ৫ বছরে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, কোথায় সুদিন?

৫০ শতাংশ বাড়ল সব্জির দাম, সাড়ে ৫ বছরে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, কোথায় সুদিন?

ee1ad74d575324fd7c9dbc3307b2aa3f

 

নয়াদিল্লি: রাতারাতি মহার্ঘ রান্নার গ্যাসের দাম৷ মাথায় হাত মধ্যবিত্ত জনতার৷ সাত মাসে প্রায় ৩০০ টাকা বেড়েছে ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাসের দাম৷ এই নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে আমজনতা৷ মধ্যবিত্তের চিন্তা আরও বাড়িয়ে এবার প্রকাশ্যে এসেছে দেশের মূল্যবৃদ্ধির চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট৷

জানা গিয়েছে, খুচরো বাজারে গত সাড়ে পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা গিয়েছে৷ ডিসেম্বরের তুলনায় আরও বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি৷ পরিসংখ্যান বলছে, মুদ্রাস্ফীতি ৭.৩৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭.৫৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে সর্বাধিক মূল্যবৃদ্ধির সূচক উঠেছে৷ গত বছরের জানুয়ারিতে খুচরো বাজারে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ১.৯৭ শতাংশ৷ ২০১৪ সালের মে মাসে ছিল ৮.৩৩ শতাংশ৷ চলতি বছর জানুয়ারিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে ১৪.১৯ শতাংশ৷ সবজির দাম বেড়েছে ৫০.১৯ শতাংশ৷ ডালের দাম বেড়েছে ১৬.৭১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ মাংস, ডিমের দামও ১০ শতাংশ হারে বেড়েছ৷

সাড়ে পাঁচ বছরে খুচরো বাজারে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণ কী? এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে অর্থনীতিবীদ অভিরূপ সরকার জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিকে বলা হয় টেক্সসেশন৷ অর্থাৎ একদিকে মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া৷ এর মূল কারণ হল, খাদ্যপণ্যের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি হওয়ায৷ কৃষিপণ্যের দাম দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ শাক সবজির দাম বেড়েছে৷ চালের দাম বাড়ছে৷ একই সঙ্গে উল্টোদিক থেকে শিল্পজাত পণ্যের দাম ততটা বাড়ছে না৷ কারণ সেখানে রীতিমত চলছে৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যখন মুদ্রাস্ফীতির সূচক নির্ধারণ করা হয়, তখন খাবার-দাবারের ওপর অনেকটা ওয়েটেজ দেওয়া হয়৷ ফলে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে৷ এর কারণে গরীব মানুষ অনেক বেশি প্রভাবিত হচ্ছেন৷ কারণ তাঁরা তাঁদের বড় একটা অংশ খাবার কিনতে খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন৷

অন্যদিকে, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন মিটতে একধাক্কায় ১৪৯ টাকা বাড়াল রান্নার গ্যাসের দাম৷ এক দিকে কম ভর্তুকি, অন্যদিকে লাফিয়ে লাফি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জেরে বিপাকে বহু গ্রাহক৷ গত ছ’মাস কম ভর্তুকি পেয়ছেন টাকা পাচ্ছেন গ্রাহকরা৷ আর তাতেই বাড়ছে ক্ষোভ৷ ভর্তুকিযুক্ত রান্নার গ্যাসের দাম জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দামের কোনও হেরফের হয়নি৷ ফলে, ভর্তুকি একই থাকার কথা৷ কিন্তু, ফেব্রুয়ারিতে চার টাকা কম ভর্তুকি পেয়েছেন গ্রহকরা৷ চলতি মাসে ভর্তুকির পরিমাণ কত হবে, তাও এখনও পরিষ্কার নয়৷ একদিনে ভর্তুকিতে কোপ, অন্যদিকে নতুন করে ভর্তুকিহীন রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানোয় গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ৷ অন্যদিকে, আজ থেকে একধাক্কায় ১৪৯ টাকা বাড়াল রান্নার গ্যাসের দাম৷ ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের নতুন দাম ৮৯৬ টাকা নির্ধারিত হয়েছে৷ রাতারাতি রান্নার গ্যাস মহার্ঘ হতেই ক্ষোভ বেড়েছে জনতার৷

অন্যদিকে, গ্রাহকদের অভিযোগ, বাড়িতে গ্যাস ডেলিভারি দেওয়ার সময় ক্যাশমেমোয় লেখা দামের অনুপাতে গ্রাহক কত টাকা ভর্তুকি পাবেন, তারও উল্লেখ না থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে৷ গত আগস্ট থেকে ক্যাশমেমোয় ভর্তুকি অঙ্ক তুলে দেওয়া হয়েছে৷ আর তাতেই বাড়ছে ধোঁয়াশা৷ গ্রাহকরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেছেন, মাসে তাঁরা ভর্তুকি পেয়েছেন ৭৪.০৫ টাকা৷ হিসবা বলছে, প্রতি মাসে গ্যাসের দাম ও ভর্তুকিমূল্য কখনও সাত, কখনও আট টাকা কম পাচ্ছান গ্রাহকরা৷ প্রতি মাসে গ্যাসের দাম বেড়লেও সেই হারে ভর্তুকি বাড়ছে না৷ ক্যাশমেমোয় তার উল্লেখ না থাকায় গ্রাহকরা পড়েছেন চূড়ান্ত বিভ্রান্তিতে৷

হিসাব বলছে, জানুয়ারিতে গ্যাসের দাম ছিল ৭৪৭ টাকা৷ ডিসেম্বরের তুলনায় ২১.৫০ টাকা বেশি৷ ডিসেম্বরে ভর্তুকি মিলেছে ১৭০.৯০ টাকা৷ জানুয়ারিতে দাম বৃদ্ধি হওয়ায় ভর্তুকি ২১.৫০ টাকা বেশি হওয়ার কথা থাকলেও তা পাননি গ্রাহকরা৷ ভর্তুকি মিলেছে মাত্র ১৮৭.৩৮ টাকা৷ ২১.৫০ টাকার পরিবর্তে ভর্তুকি পাওয়া গিয়েছে ১৬.৪৮ টাকা৷ ফেব্রুয়ারির শুরুতে গ্যাসের দাম অপরিবর্তিত রাখা হলেও গত মাসের মতো ভর্তুকি বাবদ ১৮৭.৩৮ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি৷ পাওয়া গিয়েছে ১৮৩.৩৮ টাকা৷ কিন্তু, বাস্তবে তা পাওয়ার কথা ছিল ২০৪.৩৮ টাকা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *