লাটে উঠেছে দেশের জনতার সঞ্চয়, ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বলছে কেন্দ্রীয় সমীক্ষা

লাটে উঠেছে দেশের জনতার সঞ্চয়, ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বলছে কেন্দ্রীয় সমীক্ষা

c700ac7a431e25d907cdd78d231d942f

নয়াদিল্লি: ঢাকঢোল পিটিয়ে সদ্য বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন৷ বাজেট পেশ হওয়ার এক মাস না কাটলেও অর্থনীতির বিপর্যয়ের রিপোর্ট আরও একবার সামনে এল৷ তাও আবার কেন্দ্রীয় সমীক্ষায়!

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের সমীক্ষা বলছে, দেশের সাধারণ মানুষের সঞ্চয় বিপুল হারে কমেছে৷ মানুষের হাতে যথেষ্ট আয় না থাকার কারণে উদ্বৃত্ত অর্থ সঞ্চয় জন্য আর থাকছে না৷ ফলে দেশে চলতি বছরে সঞ্চয়ের হার বিপুল হারে কমে গিয়েছে৷ গত ১৫ বছরে যা সর্বাধিক কমেছে সঞ্চয়ের পরিমাণ৷

সাধারণ সঞ্চয় থেকে পারিবারিক সঞ্চয়ের হার আরও বেশি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে৷ ব্যাংক ও অনান্য সঞ্চয় প্রকল্পে সাধারণ মানুষের উদ্বৃত্ত অর্থ সঞ্চয় করে থাকেন৷ আর সেই অর্থ সাধারণত দেশে বিনিয়োগের কাজে লাগত৷ কিন্তু বর্তমান সরকারের জমানায় শিল্পে বিনিয়োগ ক্রমশ কমছে, তার অন্যতম কারণ সঞ্চয়ের পরিমাণ কমে আসা বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷ এতে বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে সরকারের৷ ফলে অর্থমন্ত্রীর দেখানো অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা আর ফল দেওয়ার মতো অবস্থা নেই বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

গোটা দেশে সঞ্চয়ের ৬০% আসে গৃহভিত্তিক বা পারিবারিক সঞ্চয় থেকে৷ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের সমীক্ষা বলছে, পরিবার চালাতে ও নিত্য ভোগ্যপণ্যে যে হারে খরচ বেড়েছে, তাতে পরিবার সামলে সঞ্চয়ের হার দিনে দিনে কমছে৷ দেশের মানুষের সঞ্চয় কমছে যার ফলে দেশের বাজারে বিক্রি কমছে৷ আর এতেই মন্দা দেখা দিয়েছে শিল্পক্ষেত্রে৷

শিল্পক্ষেত্র উৎপাদন কমছে৷ কমছে সঞ্চয়ে৷ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ ছিল জাতীয় বৃদ্ধির ৩০.১ শতাংশ৷ ২০০৭-২০০৮ অর্থবর্ষে সেই সঞ্চয়, জাতীয় বৃদ্ধির ৩৬ শতাংশ ছিল৷ ২০১১-২০১২ অর্থবর্ষে তা কমে দাঁড়ায় ৩৬%৷ ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে তা কমে হয়েছে ৩০.১%৷ ১৫ বছর আগে ২০০৩-২০০৪ অর্থবর্ষে বিপুল হারে সঞ্চয় করে কমে দাঁড়ায় ২৯ শতাংশ৷ পারিবারিক ক্ষেত্রে এই সঞ্চয়ের হার ২০১১-২০১২ সালে জাতীয় উৎপাদনের ২৩% ছিল৷ ২০১৯ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশ৷ সঞ্চয় কমে যাওয়ার কারণে বিনিয়োগ হ্রাস পাওয়ায় বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে৷ ঋণ বাড়ায় সুদ বাবদ খরচ বেড়েছে৷ ফলে দেশের কোষাগারে ঘাটতির দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে৷ ২০১৫ সালে দেশে বিদেশি ঋণ ৭৪ হাজার কোটি ডলার৷ চলতি বছরে ৫৪ হাজার কোটি ডলার হতে চলেছে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *