মুম্বই: বিদেশে পালানোর ছক কষেছিল ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তার মেয়ে৷ রবিবার বিকেলে মুম্বই এয়ারপোর্ট থেকে রোশনি কাপুরকে আটক করা হয়েছে৷ তিনি লন্ডনে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে৷ অন্যদিকে, রবিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়, ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তা রানা কাপুরকে৷ প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করে ইডি৷ তারপরে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারী, বিদেশে অর্থ পাচার সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করেন বলে জানা গিয়েছে৷
কয়েকদিন আগেই ইয়েস ব্যাঙ্কের বড়সড় কেলেঙ্কারি সামনে আসে৷ তারপরেই ইডি ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করে৷ যাঁদের বিরুদ্ধে এই নোটিশ জারি করা হয়েছে, তাঁরা দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না৷ দেশের সমস্ত বিমান বন্দরে এই নোটিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ এই নোটিশের ভিত্তিতেই রোশনি কাপুরকে আটকানো হয়েছে বলে মুম্বই বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে৷
মুম্বইয়ে বেলার্ড এস্টেটের ইডি-র দফতরে টানা ২০ ঘণ্টা চলে জেরা। তারপর গ্রেফতার করা হয়েছে রানা কাপুরকে। ইতিমধ্যেই রানার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে অসহযোগিতা এবং আর্থিক তছরুপের অভিযোগেই ইয়েস ব্যাঙ্কের এই প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রানা কাপুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এমন বেশ কিছু সংস্থাকে লোনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন যেগুলো ঋণের ভারে জর্জরিত। ঋণ শোধ না হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কেবল রানার অঙ্গুলি হেলনেই ওই সংস্থাগুলিকে লোন পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রানা কাপুরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার সঙ্গে যোগ রয়েছে দেওয়ান হাউসিং ফিনান্স কর্পোরেশন কেলেঙ্কারি।
শুক্রবার রাত থেকেই রাণার ওরলি-র বাড়ি ‘সমুদ্র ভবন’-এ তল্লাশি শুরু করে। রাতভর তল্লাশির পরে ইডি-কর্তারা জানতে পারেন, দেওয়ান হাউজিং ফিনান্স লিমিটেড(ডিএইচএফএল)-এর মালিক ধীরজ ওয়াধাবনের সংস্থা আর কে ডব্লিউ ডেভেলপার্স-কে ৭৫০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল ইয়েস ব্যাঙ্ক। কে ডব্লিউ ডেভেলপার্সের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের একদা ডান হাত ইকবাল মেমন ওরফে ইকবাল মির্চির কয়েক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল বলে আগেই জানতে পেরেছিল ইডি।
অন্যদিকে, দিল্লি ও মুম্বইয়ে রাণার তিন মেয়ের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি। ইডি সূত্রের বক্তব্য, রাণা ইয়েস ব্যাঙ্কের শীর্ষ পদে থাকার সময় এমন বহু সংস্থাকে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল, যেগুলি লোকসানে ডুবে রয়েছে। ঋণ শোধ না হওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও মূলত রাণার নির্দেশেই ব্যাঙ্কের কর্তারা ঋণ মঞ্জুর করেন।