করোনা রুখতে হোম-যজ্ঞ, দেদার গোমূত্র পান! পথ দেখাচ্ছে হিন্দু মহাসভা

'গোমূত্র পার্টিতে' যোগদানকারী এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা ২১ বছর ধরে গো-মূত্র পান করে আসছি, আমরা গোবর স্নানও করি। আমরা কখনও ইংরেজী ওষুধ সেবন করার প্রয়োজন অনুভব করি নি।”

নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে মহামারী বলে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তৃতীয় বিশ্বে অত্যাধুনিক গবেষণার যুগেও এই ভাইরাসের ভয়াবহতা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে বলা যায়। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের উন্নত দেশগুলির বিজ্ঞানীরা দিনরাত এক করে ফেলছেন শুধুমাত্র করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের বা সংক্রমণ নিরাময়ের ওষুধ খুঁজে বের করতে। যদিও এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন এর কথা জোর দিয়ে বলতে পারেননি কেউ। সে দিক থেকে বলা যায় ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে করোনা প্রতিরোধের একাধিক বিশ্বাসযোগ্য ওষুধের কথা শোনা যাচ্ছে প্রসিদ্ধ ব্যাক্তিত্বদের মুখে। এর মধ্যে শীর্ষ তালিকায় রয়েছে 'গোমূত্র'। আর এই ওষুধ শুধু পরীক্ষামূলক নয় রীতিমতো কার্যকরী বলে দাবি করা হচ্ছে। 

গবেষকরা হতবাক হলেও নির্বিকার দেশের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। তাই ভারতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই এবার প্রকাশ্যে গোমূত্র পান করার জন্য প্রচার শুরু করে দিল অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। সরকারিভাবে একের পর এক সমস্ত রাজ্যগুলিতে তখন যেকোনও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে তখন শনিবার খোদ রাজধানী দিল্লির বুকে মন্দির মার্গ এলাকায় সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত হল 'গোমূত্র পার্টি'।

প্রায় ২০০ মানুষ রোগ দিয়েছেন এই সভায়। সভার সূচনা হয় যজ্ঞের মধ্যে দিয়ে। সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল করোনা প্রতিরোধে গোমূত্রের ধন্বন্তরি প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা। সভার দুই মূল উদ্যোক্তা অধ্যক্ষ চক্রপাণি মহারাজ ও উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার আশিষ নিজেরাই গোমূত্র পান করে উপস্থিত সকলকে উৎসাহিত করেন গোমূত্র পান করতে। এর জন্য সভাস্থলে একটি বড় পাত্রে গোমূত্র রাখা হয়েছিল। ভাঁড়ে করে খাওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। অনেকেই করোনারি হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে ভাঁড়ে করে সেই গোমূত্র পানও করেন। সভায় যোগদানকারী এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা ২১ বছর ধরে গো-মূত্র পান করে আসছি, আমরা গোবর স্নানও করি। আমরা কখনও ইংরেজী ওষুধ সেবন করার প্রয়োজন অনুভব করি নি।”

চক্রপাণি মহারাজের দাবি গোমূত্রে এমন ৩২টি অনবদ্য উপাদান আছে যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ভাইরাস সংক্রমণ রোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে।

এর আগে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা ক্যান্সারের নিরাময়ের গরুর প্রস্রাবকে ওষুধ হিসাবে ব্যবহার পরামর্শ দিয়েছেন। এবার  এই ওষুধই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি দিতে পারে, এমন দাবিতে সিলমোহর দিলেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার অধ্যক্ষ চক্রপাণি মহারাজ ।

যদিও ক্যান্সার হোক বা করোনা কোনো ক্ষেত্রেই গোমূত্র পানের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি বা ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তবুও এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে করোনার ভাইরাসের প্রভাব দূরীকরণের জন্য এই অভিনব 'পার্টি' বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলাই বাহুল্য। তবে এর প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তার সময় বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 14 =