বেটা ইনসাফ মিল গ্যয়া! ‘ঘুমন্ত’ মেয়ের ছবি আগলে মায়ের আর্তনাদ

বেটা ইনসাফ মিল গ্যয়া! ‘ঘুমন্ত’ মেয়ের ছবি আগলে মায়ের আর্তনাদ

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ সাত বছরের লড়াই৷ দীর্ঘ অপেক্ষা৷ বহু কষ্ট, বহু যন্ত্রণার পথ পেরিয়ে অবশেষ জয়ী নির্ভয়া৷ জয়ী তাঁর পরিবার৷ জয়ী গোটা দেশ৷ চার অপরাধীর মৃত্যুতে পূর্ণ মায়ের ধর্ম৷ আজও হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা মেয়ের মুখখানি ভুলতে পারেননি আশাদেবী৷ ভুলতে পারেননি, মেয়ের আর্তি৷ ‘মা আমি সুবিচার চাই’৷

শুক্রবার নির্ভয়ার চার অপরাধী ফাঁসিতে ঝোলার পরই মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরেন আশাদেবী৷ বলেন, মা তুই সুবিচার পেয়েছিস৷ ‘‘আমার মেয়ে আর কোনও দিনও ফিরবে না৷ কিন্তু আজকের পর দেশের আর পাঁচটা মেয়ে কিছুটা হলেও নিরাপদ বোধ করবে৷ সবাই বুঝবে ছেলেদের সঠিক শিক্ষা দিতে হবে৷ না হলে এমন জঘন্য অপরাধের জন্য ফাঁসি কাঠে ঝুলতে হবে’’, বললেন আশাদেবী৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বছরের পর বছর অপেক্ষা করছি৷ আজকে আমার মেয়ে সুবিচার পেয়েছে৷ আজকের সকাল আমাদের কাছে এক নতুন ভোরের সূচনা করল৷ নির্ভয়ার মা হিসাবে আজ আমি গর্বিত৷’’
শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫ টায় দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসি দেওয়া হয় নির্ভয়া কাণ্ডের চার অপরাধী অক্ষয় ঠাকুর (৩১), পবন গুপ্তা (২৫), বিনয় শর্মা (২৬) ও মুকেশ সিংকে।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নির্ভয়ার মা বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দেশের মেয়েদের সুবিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। তবে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যে আমাদের এই দীর্ঘদিনের অপেক্ষা খুব কষ্টের ছিল। প্রবল মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি আমরা৷ তবে শেষপর্যন্ত আমরা সুবিচার পেয়েছি৷’’

২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে ২৩ বছর বয়সী এক প্যারামেডিকেল ছাত্রীকে নির্মমভাবে গণধর্ষণ করে রাজপথে ছুঁড়ে ফেলে দেয় ৬ দুষ্কৃতি। হাসপাতালে এক কঠিন লড়াইয়ের পর মারা যান নির্ভয়া৷ এই ঘটনায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল রাজধানীর রাজপথে৷ লজ্জার অবনত হয়েছিল গোটা দেশের মুখ৷ গ্রেফতার করা ছয়জনকে৷ কিন্তু নাবালক হওয়ায় তিন বছর পরই পার পেয়ে যায় ওই ঘটনায় অভিযুক্ত সবচেয়ে নিষ্ঠুর অপরাধী৷ অপর এক অভিযুক্ত রাম সিং জেলের মধ্যে আত্মহত্যা করে। বাকি ৪ অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। নানা কৌশলে মৃত্যুদণ্ড এড়ানোর চেষ্টা চালানোর পর অবশেষে শুক্রবার ফাঁসি দেওয়া হয় এই চার আসামীকে৷  

ফাঁসি কার্যকর হওয়া পর আশা দেবী বলেন, “আমি দেশের বিচার বিভাগ, সরকার তথা প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আদালত যেভাবে ওই দোষীদের সমস্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছে তাতে আমি খুশি৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 6 =