নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাস কোভিড ১৯-এর জেরে বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভারতে করোনা আক্রান্তের ঘটনা ৬০০ ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতার প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তাই জারি হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে আনুমানিক ৯ লক্ষ কোটি টাকা বাণিজ্যিক ক্ষতি হতে পারে ভারতের, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
লকডাউনের কারণে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়তে পারে দেশ। ব্রিটিশ সংস্থা বারক্লেজ এমনই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। প্রসঙ্গক্রমে তারা জানিয়েছে ইকুইটি মার্কেটের বেহাল দশার কথা। ০.৪৭ শতাংশ পতন হয়েছে বুধবারেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) কমাতে পারে সুদের হারও। তাছাড়া স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় এত পরিমাণে বেড়েছে, যা বিরাট প্রভাব ফেলছে অর্থনীতিতে। এর আগে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা সম্পর্কে আরও কয়েকটি বিষয় জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বিদেশিরা ভারতের বাজার থেকে তুলে নিচ্ছেন তাঁদের বিনিয়োগ, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই), বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) সহ শেয়ার বাজারের ধারাবাহিক পতনের মতো বিষয়গুলি প্রভাব ফেলবে অর্থনীতিতে। এছাড়াও হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, পাবগুলি বন্ধের সিদ্ধান্তও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে, এই মুহূর্তে লক ডাউন ছাড়া অন্য কোনও উপায় দেখছে না সরকার।
২১ দিন জারি থাকবে লকডাউন। জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণে এমনই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা এত দ্রুত ছড়াচ্ছে যে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশও এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে দাঁড়াতে পারছে না। করোনা মোকাবিলার জন্য সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের কথা শোনা গেছে প্রধানমন্ত্রীর মুখে। তিনি বলেন, 'সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং শুধুমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বলেই মনে করেন অনেকে। আসলে এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং সবার জন্যই দরকার। এমনকী, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও এটা প্রয়োজনীয়।' তিনি সতর্ক করে বলেন, 'এই ধরনের ভুল ধারণা আমাদের মধ্যে থাকলে ভারতকে অনেক খেসারত দিতে হবে। কতটা মূল্য চোকাতে হবে, তার কোনও ধারণা নেই।' সেই কারণেই লক ডাউনের সিদ্ধান্ত। এই ঘোষণার পাশাপাশি আগামী ২১ দিনের লক ডাউনের পরিস্থিতিতে জনসাধারণ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাবার, ওষুধ কীভাবে পাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছে অনেকেই।