বাড়ি ফিরতে ১০০ কিমি পথ হাঁটলেন গর্ভবতী, সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!

ফিরতেই হবে বাড়ি, স্বামীর হাত ধরে ১০০ কিমি পথ হাঁটলেন গর্ভবতী মহিলা৷ সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!

f0f98825cf932fed9d13e27fa4a434f8

নয়াদিল্লি: করোনার ধাক্কায় স্তব্ধ গোটা দেশ৷ বন্ধ কাজ-কারবার৷ অথৈ জলে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলো৷ অধিকাংশ জায়গায় শ্রমিকদের বেতন না দিয়েই কাজ থেকে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন মালিকরা৷ তাঁরা খাবেন কি? বেঁচে থাবকেন কি ভাবে? প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে তাই মাইলের পর মাইল হেঁটে তাঁরা পাড়ি দিয়েছেন বাড়ির পথে৷ অসহায় হয়েই স্বামীর হাত ধরে পথে নামেন আট মাসের গর্ভবতী ইয়াসমিন৷ সাহারানপুর থেকে বুলান্দশহরে বাড়ির পথে পা বাড়ান তাঁরা৷ সঙ্গে নেই এক ফোঁটা খাবার৷ প্রখর রৌদ্রে পথ চলতে চলতে তাঁরা ক্লান্ত-অবসন্ন৷ এই অবস্থায় এই দম্পতির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন স্থানীয় কিছু মানুষ৷

সাহারানপুর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে মীরুটে পৌঁছন ইয়ায়মিন ও তাঁর স্বামী ভাকিল৷ সেখানেই ওই দম্পতি স্থানীয় বাসিন্দা নবীন কুমার এবং রবীন্দ্রর নজরে আসেন৷ তাঁদের করুণ অবস্থা দেখে ওই দম্পতির পাশে দাঁড়ান তাঁরা৷ নওচান্দি থানার সাব-ইন্সপেক্টর প্রেমপাল সিংকে ইয়াসমিন ও ভাকিলের সমস্যার কথা জানান প্রবীণরা৷ থানার ইনচার্জ আশুতোষ কুমার জানান, প্রেমপাল ওই দম্পতির হাতে কিছু খাবার-দাবার, টাকা পয়সা তুলে দিয়েছেন৷ তাঁরা যাতে সুষ্ঠুভাবে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷

ইয়াসমিন পুলিশকে জানান, ফ্যাক্টরির একটি ঘরে তাঁদের ঠাঁই দিয়েছিলেন মালিক৷ কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরই ঘর খালি করে দিতে বলে হয় তাঁদের৷ তবে বাড়ি যাওয়ার জন্য একটা কানাকড়িও দেওয়া হয়নি তাঁদের৷ কোনও বিকল্প পথ খুঁজে না পেয়ে বৃহস্পতিবার হাঁটা শুরু করেন তাঁরা৷ ইয়াসমিন বলেন, গত দু’দিন ধরে আমাদের কাছে কোনও খাবার নেই৷ রাস্তার পাশে কোনও খাবারের দোকান খোলা পাইনি৷ অভুক্ত অবস্থাতেই হেঁটে চলেছি৷

করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে গত মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এর পরই পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন দেশের হাজার হাজার শ্রমিক৷ লকডাউনের জন্য যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা নজরে এসেছে প্রধানমন্ত্রীরও৷ রবিবার মন কি বাত অনুষ্ঠানে এই অসুবিধার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমাও চান তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *