লখনউ: করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বলা হচ্ছে যোদ্ধা। তাঁদের সক্রিয় ভূমিকার তারিফ করেছে কেন্দ্র, এমনকী, রাজ্য সরকারও। এরই মধ্যে উত্তরপ্রদেশের রায় বরেলি জেলার একটি কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তো নেই, তার ওপর সময়মতো খাবার, পানীয় জলও পাচ্ছেন না তাঁরা। এমনকী, রাতবিরেতে থাকছে না বিদ্যুৎ পরিষেবাও। লিখিত অভিযোগ করেও কোনও সুরাহা মেলেনি। অবশেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনার ভিডিও পোস্ট করতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
রায় বরেলি জেলার একটি কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রকে ঘিরে উঠেছে অভিযোগ। মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগপত্রে ২৫ জনের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর দল সেই সমস্যার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু নেওয়া হয়নি কোনও ব্যবস্থা। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা একাধিক ভিডিও শেয়ার করে। সেখানে একজন চিকিৎসককে বলতে শোনা যায়, 'বড় বড় ক্লাসরুমে চারটে করে বেড দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ কোয়ারেন্টাইন নিয়মবিরুদ্ধ।' এছাড়াও সেখানে যে বাথরুম রয়েছে, তার পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'স্নানের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেই এখানে। সারা রাত বিদ্যুৎ পরিষেবার থাকে না। সকাল থেকে আমাদের জন্য কোনও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি। নেই পানীয় জলও। আমাদের শুধু এটাই বক্তব্য, আমরা যখন রোগীদের দেখছি, তখন একই ঘরে থাকা, একই শৌচালয় ব্যবহার করা, এগুলোই কি কোয়ারেন্টাইনের প্রকৃত নিয়ম? একজন যদি করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে কি এর ফলে দ্বিতীয় কেউ আক্রান্ত হবেন না? এভাবে পুরো ২৫ জনের দলই আক্রান্ত হবে না এতে?' দুপুরের খাবারে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যা খেতে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও উঠেছে অভিযোগ। অন্য একটি ভিডিওয় দেখা গেছে সেই দৃশ্য। ভিডিওগুলি প্রকাশ্যে আসতেই চিফ মেডিক্যাল অফিসার জানিয়েছেন, চিকিৎসক-সহ সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই দলটিকে স্থানীয় একটি গেস্ট হাউসে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত পরিষেবাও রাখা হবে বলে জানা গেছে।
বুধবারের ওই ঘটনার আগে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি তখন তাঁদের জন্য। বুধবার রাতে ভিডিওগুলি প্রকাশ্যে আসার পরই প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি এমন আচরণের কারণ নিয়েও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ।