নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাসের কবলে প্রায় গোটা বিশ্ব৷ নিস্তার পায়নি ভারতও৷ তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই উঁকি দিচ্ছে আশার আলো৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিশ্ব উৎপাদন কেন্দ্রের তকমা খোয়াতে পারে চিন৷ আর এই পরিস্থিতিতে একাধিক বিদেশি সংস্থার কাছে নতুন ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসাবে পয়লা পছন্দ হতে চলেছে ভারত৷
বিপুল সংখ্যাক বিদেশি কোম্পানির কারখানা রয়েছে চিনে৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে জাপান, আমেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ, যারা উৎপাদন ক্ষেত্রে চিনের উপর অত্যধিক নির্ভরশীল ছিল, তাদের পাখির চোখ এখন ভারত৷ চিন থেকে কারখানা গুটিয়ে ভারতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে তারা৷
চিনে প্রায় এক হাজার বিদেশি সংস্থার কারখানা রয়েছে৷ ইতিমধ্যেই ৩০০টি সংস্থা ভারতে তাদের ইউনিট গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে৷ কেন্দ্রের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনাও চালাচ্ছে তারা৷ মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম, চিকিৎসা সরঞ্জাম, বস্ত্র এবং সিন্থেটিক ফেব্রিক সংস্থাগুলি আসতে চাইছে ভারতে৷ এর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি নামিদামী সংস্থাও৷ রয়েছে বিখ্যাত আইফোন কোম্পানি অ্যাপলের সহযোগী সংস্থা উইসট্রোন কর্পোরেশন, তাইওয়ানের সংস্থা পেগাট্রন, দক্ষিণ কোরিয়ার আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি – হুন্ডাই স্টিল এবং পসকো৷ রয়েছে আমেরিকার ইলেকট্রনিক্স অ্যন্ড টেকনোলজি ফার্ম টেলিডিন এবং মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন৷
শুধু এই সংস্থাগুলিই নয়, দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক সংস্থা ভারতে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে৷ ইতিমধ্যেই নিজেদের সংস্থার জন্য ২ বিলিয়ন ডলারের মেগা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে জাপান৷ চিনের বাইরে নিজেদের কারখানা ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তারা৷
এদিকে, বিদেশি সংস্থাগুলির নজর কাড়তে বেশ কিছু ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার৷ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কর্পোরেট ট্যাক্স ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়৷ নতুন কোম্পানিগুলির জন্য রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ৷ কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতে নতুন কারখানা খোলার জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স দিতে হবে মাত্র ১৫ শতাংশ৷ উল্লেখযোগ্যভাবে গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম কর্পোরেট ট্যাক্স দিতে হয় একমাত্র ভারতেই৷ ভারত ছাড়াও এই সকল সংস্থাগুলির বিকল্প পছন্দের তালিকায় রয়েছে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া৷