‘নির্বোধ’ না হলে শ্রমিকদের থেকে ভাড়া নিতে পারে কেন্দ্র? বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম

‘নির্বোধ’ না হলে শ্রমিকদের থেকে ভাড়া নিতে পারে কেন্দ্র? বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম

নয়াদিল্লি: লকডাউনের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া লাখ লাখ শ্রমিক৷ এবার তাঁদের ফেরাতে সাহায্যের হাত বাড়াল জাতীয় কংগ্রেস৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ভাড়া কংগ্রেস বহন করবে বলে সোনিয়া গান্ধীর বিবৃতির পর ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে নিজেদের অবস্থান জানাল ভারতীয় রেল৷ খোদ কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার কতটা নির্বোধ হলে অনাহারে থাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে ট্রেনের ভাড়া আদায় করতে পারে৷ পিএম কেয়ার্স ফান্ডের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও কেন্দ্রকে বিঁধেছেন রাহুল গান্ধী৷

লকডাউনে আটকে পড়া শ্রমিক থেকে শুরু করে পড়ুয়া ও পর্যটকদের ফেরাতে ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন চালু করা হবে৷ ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ চালু করা হলেও যাত্রীদের থেকে ভাড়া নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিল রেল৷ এই নিয়ে সরব হন বিরোধীরা৷ কাজ হারানো ভুখা শ্রমিকরা কীভাবে টিকিটের ভাড়া গুনবেন, তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক৷

আটকে পড়া শ্রমিকদের টিকিটের ভাড়া কংগ্রেস মেটাবে বলে বিবৃকতি দেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী৷ জানান, সংকটের সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে ভাড়া নেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত কষ্টদায়ক৷ তাঁদের কাছে না পর্যাপ্ত টাকা নেই৷ জুটছে না খাবার৷ বাড়ি ফিরতে চাওয়া শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে পরিবহনের সুযোগও মিলছে না৷ এই শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড৷ তাঁদের বাড়ি ফিরতে ট্রেনের টিকিটের ভাড়া জাতীয় কংগ্রেস বহন করবে৷ বিদেশ থেকে ভারতীয়দের নিখরচায় বিমানের ফেরানো হয়েছে৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনের ভাড়া মকুব করা হবে না কেন? প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷

 

কেন্দ্র ‘নির্বোধ’ বলে মন্তব্যও করেন খোদ বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী৷ টুইটে বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার কতটা নির্বোধ হলে অনাহারে থাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে ট্রেনের ভাড়া আদায় করতে পারে৷ বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিখরচায় দেশে ফিরিয়ে এনেছে এয়ার ইন্ডিয়া৷ রেল যদি ট্রেন ভাড়া মকুব করতে না পারে, তাহলে পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে কেন সেই টাকাটা মিটিয়ে দিচ্ছেনা কেন্দ্র সরকার?’’

এরপর বিজেপি সাংসদ আরও দাবি করেন, তিনি এই বিষয়ে রেলমন্ত্রী সঙ্গে কথা বলেছেন৷ পরবর্তী টুইটে তিনি লিখেন, ‘‘পীযূষ গোয়েলের অফিসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে৷ বিনা খরচে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ট্রেন ভাড়ার ৮৫% দেবে কেন্দ্র সরকার৷ বাকি ১৫ শতাংশ খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার৷ খুব শীঘ্রই বিবৃতি প্রকাশ করবে রেল মন্ত্রক৷’’ পিএম কেয়ার্স ফান্ডের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও কেন্দ্রকে বিঁধেছেন রাহুল গান্ধী৷ টুইট করে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘একদিকে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পড়া শ্রমিকদের থেকে ভাড়া আদায় করছে রেল, অন্যদিকে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে তারা ১৫১ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে৷ কৌশলটা ধরতে পারছেন?’’

গোটা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই রেলমন্ত্রককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআইএ জানিয়েছে, রেল শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে কোনও ভাড়া নিচ্ছে না৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতিটি কোচে বার্থ ফাঁকা রেখে শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে৷ ট্রেনগুলি কোথাও না থেমে সরাসরি গন্তব্যগুলি পৌঁছে যাবে৷ রেল শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে খাবার ও জলের ব্যবস্থা করেছে৷ রেশ শুধুমাত্র স্ট্যান্ডার্ড ভাড়া হিসাবে রাজ্যের থেকে ১৫ শতাংশ দাবি করেছে৷ রেল শ্রমিকদের কাছে কোনও টিকিট বিক্রি করছে না৷ রাজ্যগুলির দেওয়া তালিকার ভিত্তিতে যাত্রীদের পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 18 =