নয়াদিল্লি: করোনা প্যানডেমিকে আক্রান্ত গোটা বিশ্ব৷ প্রায় পাঁচ মাস হতে চলল, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পঠনপাঠন৷ অধিকাংশ জায়গায় চলছে অনলাইন ক্লাস৷ এই অবস্থায় অনেকেই মনে করছেন ফের চালু করা হোক স্কুল৷ কিন্তু পড়ুয়াদের ক্লাসরুমে ফিরিয়ে আনা সারা বিশ্বের সামনেই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
ধীরে ধীরে বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতির স্বাভাবিক হচ্ছে৷ কোথাও আবার করোনাকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচতে শিখছে মানুষ৷ এই সংক্রামক রোগের হাত থেকে যে সহজেই মুক্তি মিলবে না, সেই ইঙ্গিত আগেই মিলেছে৷ ফলে সংক্রণের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই খুলতে হবে স্কুল৷ পড়াশোনার যাতে আর ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে পড়ুয়াদের স্কুলে আসাটাও অত্যন্ত জরুরি৷ কিন্তু এতে সায় নেই অধিকাংশ বাবা-মায়েদেরই৷ সন্তানদের নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত তাঁরা৷
রাষ্ট্র সংঘের শিক্ষা সংগঠন ইউনেস্কো জানাচ্ছে, ‘‘কিন্ডারগার্টেন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে বিশ্বের ১৯৫টি দেশের ১.৫ বিলিয়ন ছাত্রছাত্রী আজ ঘরবন্দি৷ করোনা পরিস্থিতিতে কখন এবং কী ভাবে পুনরায় স্কুল খোলা হবে, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেই সহজ কাজ হবে না৷’’ রাষ্ট্র সংঘের প্রধান অড্রে আজোলে বলেন, ‘‘অসংখ্য পড়ুয়া পড়াশোনার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে৷ এই অবস্থায় স্কুল খোলার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতেই হবে৷’’
সারা বিশ্বকে গ্রাস করেছে মারণ করোনাভাইরাস৷ এই অসুখের সঙ্গে মানিয়ে ওঠাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ৷ পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বেশি মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে মানব জাতির৷ করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সেই লড়াই যেন চালাচ্ছে তারা৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে এই অতিমারির দাপটে থমকে গিয়েছে পড়ুাদের জীবনও৷ সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বাবা-মায়েরা৷ অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও, অধিকাংশ দেশের সরকারই এখন মনে করছে, নিজেদের ঘরে বন্দি না রেখে করোনাকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচতে শেখা উচিত আমাদের৷ কিন্তু বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নন৷ বেশ কিছু দেশে স্কুল খোলার চিন্তাভাবনা চললেও, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে প্রস্তত নন অভিভাবকরা৷
যুব সমাজের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার কম হলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হতে পারেন৷ আর এই বিষয়টিই বারেবারে ভাবাচ্ছে অভিভাবকদের৷ একইভাবে চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও৷ স্কুল শুরু হলেও, ক্লাস রুমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ভীষণই কঠিন কাজ৷ এর জন্য গোটা ক্লাসের গঠন বদলাতে হবে৷ ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেবে৷ ভারতের মতো দেশে অধিকাংশ স্কুলেই কমপক্ষে ৫০০ জন পড়ুয়া রয়েছে৷ তার উপর ক্লাসরুমগুলিও বিশেষ বড় হয় না৷ সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী ভাবে ক্লাস করানো সম্ভব, সেটা নিশ্চিতভাবেই চিন্তার বিষয়৷