চণ্ডীগড়: করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৃতীয় দফার লকডাউন চলছে গোটা দেশ জুড়ে। কেন্দ্রের তরফে এক গুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা সত্ত্বেও স্বস্তিতে নেই কৃষকরা। ফলন হওয়া সত্ত্বেও মজুত করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। লকডাউনের জেরে হচ্ছে না ব্যবসা। হরিয়ানার ঘারাউন্ডায় এমনই দৃশ্য দেখা গেল। রেকর্ড হারে মজুত হচ্ছে বটে, কিন্তু শস্য বেচতে পারছেন না গম চাষীরা।
গম উৎপাদনে ভারতের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় রাজ্যগুলির তালিকায় হরিয়ানা থাকলেও কার্যত স্বস্তিতে নেই রাজ্যের কৃষকরা। মাথায় হাত গম চাষীদের। ঘারাউন্ডার ৫০ বছরের প্রবীণ কৃষক সুক্রমপালের চিন্তা একটাই, কীভাবে বিক্রি করবেন শস্য। তাঁর কথায়, হোলসেল বাজারে হাতে গোনা কর্মী। খাঁ খাঁ করছে বাজার। বেশিদিন মজুত করে রাখলে নষ্ট হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, 'গম মজুত করে রাখার কোনও অর্থই হয় না। যেভাবে শিলাবৃষ্টি হচ্ছে, তাতে আমার চিন্তা হচ্ছে, এই শস্যের গুণমান কতটা উপযুক্ত থাকবে, তা নিয়ে।'
পরিসংখ্যান বলছে, লকডাউনের জেরে গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে প্রায় ৭,০০০ হোলসেল ফুড মার্কেটের ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। ঘারাউন্ডা শস্য বাজারের রাধেশ্যাম নামে এক কমিশন এজেন্ট বলেন, 'কমবেশি প্রায় ৯০ শতাংশ শ্রমিক লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি। গত বছরেও ঘারাউন্ডার বাজারে ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। এই বছর সেখানে মাত্র ৫০০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এরকম দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি আমরা।'
এর আগে গত মাসে হরিয়ানার কারনাল জেলাতেও হোলসেল বাজারে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। শ্রমিকের অভাবে ধুঁকছিল এলাকার তিনটি হোলসেল বাজার। সূত্রের দাবি, এই সব ক্ষেত্রে বিহার, ঝাড়খণ্ডের বহু পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। সেই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের সারাবছরের রোজগারের ৫০ শতাংশই নির্ভর করে গম উৎপাদনের ওপর। স্বাভাবিকভাবেই শস্য উৎপাদনকারীর পাশাপাশি ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ছেন তাঁরাও। বন্ধ রয়েছে বাজারের অন্যান্য দোকানপাটও। রাকেশ কুমার নামে শস্য বাজারের এক চা বিক্রেতা বলেন, 'ব্যবসা একপ্রকার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রুটিরুজির জন্য শ্রমিকের কাজ করছি আমি।'