নয়াদিল্লি: লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চিনের সৈন্যবাহিনীর মধ্যে এক উত্তেজনাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারী যুদ্ধাস্ত্র মজুত করছে দুই দেশ। সমস্ত পৃথিবী যখন অতিমারির দাপটে বিপর্যস্ত, তখন এই আন্তর্দেশীয় দ্বন্দ্বে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল৷ সোমবার নিরবতা ভেঙে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি)-এ ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে বেড়ে চলে উত্তেজনা নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করল রাশিয়া৷ এশিয়ার এই দুই শক্তিধর দেশে খুব শীঘ্রই শান্তিপূর্ণভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে বলেও আশাবাদী তারা৷
এদিন রাজধানী দিল্লিতে একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অফ মিশন (ডিএমসি) রোমান বাবুশকিন বলেন, ‘‘এলএসি’র বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত৷ আমরা জানি ভারত ও চিন এই বিষয়ে কূটনৈতিক আলোচনা চালাচ্ছে৷ আমরা নিশ্চিত সুষ্ঠুভাবে আলোচনার মাধ্যমে তারা সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজে বার করবে৷ এই বিষয়ে আমরা তাদের সব রকমভাবে উৎসাহিত করব৷’’
বাবুশকিন বলেন, ভারত ও রাশিয়া দীর্ঘদিনের বন্ধু৷ কয়েক দশক ধরে ভারতে প্রতিরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করছে রাশিয়া৷ সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বন্ধুত্ব বেড়েছে৷ তবে রাশিয়া এবং মস্কোর সঙ্গেও দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছে ভারত সরকার৷ এখনও ভারত ও রাশিয়া ঘনিষ্ট বন্ধু৷ তবে চিনের পাশাপাশি রাশিয়াও রাষ্ট্র সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য৷ ফলে চিনের সঙ্গেও তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে জানান বাবুশকিন৷ গত সপ্তাহে ভারত জানিয়েছিল জাতীয় সুরক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে সীমান্ত বিষয়ে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ সেইসঙ্গে কূটনৈতিক এবং সেনাস্তরে শান্তিপূর্ণভাবে সীমান্ত সমস্যা সমাধান করা হবে বলেও জানানো হয়৷
মে মাসের গোড়ার দিকে লাদাখের সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় ও চিনা সেনাদের মধ্যে উত্তেজনাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায় যে বেজিং লাদাখের কাছে তাদের বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চালাচ্ছে। এমনকী বেশ কিছু চিত্রে এও দেখা যায় যে, কয়েকটি যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গত ৯ মে, একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন জওয়ানের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চিনা সেনারা। ভারতের অভিযোগ, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চিনের সেনাবাহিনী। ভারত এবং চিনের মধ্যে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে। সম্প্রতি এই সীমান্তে শুরু হয়েছে দুই দেশের সেনাবাহিনীর চাপানউতোর৷