নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে বিশ্বজুড়েই চীন বিরোধিতার এক জোরালো হাওয়া উঠেছে। অস্ট্রেলিয়া, আম্রিকার মতো কিছু দেশ সরাসরি কোভিড-১৯ ভাইরাসের উৎপত্তির কারণ হিসাবে চীনকেই দায়ী করেছে। ভারতে চীন বিরোধিতা আবার অন্য মাত্রা পেয়েছে কারণ লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে বেড়েছে চোখরাঙানি। ভারত নিজেদের ভূখণ্ডে রাস্তা তৈরি করা শুরু করে যা মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি বেজিং। তারা উলটে সেনা জমায়েত বাড়ানো শুরু করেছে সীমান্তে। এমত পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ জনগণ চীনা পণ্য বয়কট করতে উৎসাহী হয়েছে। অবশ্য কার্যক্ষেত্রে যতখানি বয়কট হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় হচ্ছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। আক্রমণের নিশানায় রয়েছে চীনা মোবাইল অ্যাপ টিকটকও।
সোশ্যাল মিডিয়ায় টিকটক ‘ব্যান’ করার ডাক দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এই ‘অভিযান’ পালে আরও হাওয়া পেয়েছে ৮ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে। এই ভাষণে তিনি ‘ভোকাল ফর লোকাল’ স্লোগান তুলেছিলেন। এর অর্থ দেশি পণ্যের জন্য আওয়াজ তোলো। এরপরে টিকটক ব্যান করার আবেদন আরও জোরালো হতে শুরু করে। অবশেষেঙ্কিছু মানুষ গুগল প্লে স্টোরে এই চীনা আপটির ‘রেটিং’ কমানো শুরু করে। কিন্তু এরই মধ্যে বড় ধাক্কা খেল টিকটক বিরোধী ক্যাম্পেন। কারণ খোদ ভারত সরকারেরই রয়েছে টিকটক অ্যাকাউন্ট। তাও আবার নীল টিক চিহ্ন সমেত, অর্থাৎ তা খাটি, নির্ভেজাল কেন্দ্র সরকারেরই অ্যাকাউন্ট, কোন ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নয়। ‘মাইগভইন্ডিয়া’ নামের এই অ্যাকাউন্টের পেজে লেখা রয়েছে ‘ভারত সরকারের জনতার সঙ্গে যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম’।
এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অগুনতি মানুষ। বিশেষত টুইটারে এই নিয়ে রাখঢাক না করেই সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দা শুরু করেছেন নেটিজেনরা। তাদের প্রশ্ন, যে সরকার চীনা পণ্যদ্রব্য বয়কট ক্যাম্পেনকে সমর্থন করে সে কী করে চীনা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারল। এই ঘটনাকে কেন্দ্রের ‘হিপোক্রেসি’ বলতে ছাড়েননি অনেকেই। প্রসঙ্গত, মাইগভইন্ডিয়া পেজ থেকে এখনও অবধি মূলত করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত সতর্কতা বাণীর ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। প্রথম ভিডিওটি ছাড়া হয়েছিল ১২ এপ্রিল যেখানে ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপটির কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও নেটিজেনদের একাংশের কাছে ভারত সরকারের টিকটক অ্যাকাউন্ট থাকা ‘হিপোক্রেসি’ বলেই মনে হয়েছে।