যুদ্ধ হলে ১৯৬২-র চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে ভারতের, দাবি চিনা সংবাদমাধ্যমের

যুদ্ধ হলে ১৯৬২-র চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে ভারতের, দাবি চিনা সংবাদমাধ্যমের

নয়াদিল্লি: গত মে মাসে পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা শুরু হওয়ার পর থেকেই লাল ফৌজের সামরিক শক্তি নিয়ে সরব হয়েছে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম৷ 

 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাগাতার ভারত সীমান্তে চিন বাহিনীর নতুন নতুন অস্ত্র ও দ্রুত সেনা মোতায়েন এবং সেনা মহড়া সম্পর্কে একের পর এক রিপোর্ট প্রকাশ করা হচ্ছে৷ গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর এই চিত্র আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ গালওয়ান উপত্যকায় ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর পর দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে৷ গত ৫০ বছরের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় এতটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়নি৷ 

বিবার চিনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য তুলে ধরা হয়৷ সেখানে বলা হয়, ‘‘ভারত জানে যে চিনের সঙ্গে যুদ্ধে তারা এঁটে উঠতে পারবে না৷’’ এমনকী ভারতে ক্রবর্ধমান জাতীয়তাবাদী মনোভাব ও বেড়ে চলা ক্ষোভের বিরুদ্ধে চিনের হুঁশিয়ারি, ‘‘ভারত যদি দেশের অভ্যন্তরে চিন বিরোধী মনোভাব দমনে ব্যর্থ হয়, তাহলে ১৯৬২ সালের চেয়েও খারাপ পরিণতি হবে ভারতের৷ বৃহত্তম প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শুরু হবে সামরিক দ্বন্দ্ব৷’’

সম্প্রতি পূর্ব-লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের ঘটনা খারিজ করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশের অভ্যন্তরেও শোরগোল বেধেছে৷ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এলএসি পেরিয়ে চিনা সেনার এই আগ্রাসী কাণ্ড নিয়ে যখন দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়, তখন খোদ প্রধানমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য কার্যত শত্রুপক্ষের হাতেই অস্ত্র তুলে দিল! 

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের রেশ টেনেই চিনা সংবাদমাধ্যমের বক্তব্য, ‘‘চিনা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন মোদি কঠোর আলোচনার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ও কট্টরপন্থীদের জবাব দিতে চাইছেন৷ তিনি এটা ভালোই জানানে, চিনের সঙ্গে বিরোধিতার পথে হাটা সম্ভব নয়৷ তাই উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন মোদি৷’’   সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক লিন মিনওয়াং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদির এই মন্তব্য দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করবে৷ তাঁর এই মন্তব্যে দেশের কট্টরপন্থীদের চিন বিরোধী মনোভাব এবং চিনা বিদ্বেষ অনেকটাই কমবে৷’’

গালওয়ান সীমান্তে ভারত-চিন সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হলেও, এই ঘটনায় কতজন চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছে, সরকারিভাবে সে বিষয়ে কোনও তথ্য দেয়নি বেজিং৷ ভারতকে বিঁধে চিনা সংবাদমাধ্যমের দাবি, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় লাল ফৌজের হতাহতের কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি চিন৷ এর প্রধান করার প্রধান কারণ হল, আমরা উত্তেজনা বাড়াতে চাই না৷ সংঘর্ষে ভারতের তুলনায় কম চিনা সৈনিকের মৃত্যু হলে চাপ বাড়বে ভারতের উপরেই৷’’ সেইসঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অসংগঠিত বলেও মন্তব্য করা হয়েছে গ্লোবাল টাইমসে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *