নয়া দিল্লি: ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে গোটা দেশ জুড়ে চিনা দ্রব্য বয়কটে সরব হয়েছে ভারতবাসী। সম্প্রতি লোকাল সার্কেলস-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ৮৭ শতাংশ ভারতবাসী এই মুহূর্তে অন্তত এক বছরের জন্য চিনা দ্রব্য বয়কটের পক্ষে। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই নিয়ে বিক্ষোভও তৈরি হয়েছে। জনসমক্ষে পোড়ানো হয়েছে চিনা দ্রব্য। গোটা দেশ জুড়ে এই নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিশেষজ্ঞদের একাংশ সংশয়ও প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, চিনা দ্রব্য বয়কটের মাধ্যমে আদতে ভারতের কোনও লাভ হবে না। বরং ক্ষতির মুখে পড়তে পারে এই দেশ। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি বিষয় তাঁরা তুলে ধরেছেন। সেগুলি হল—
ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার চিন— এই মুহূর্তে ভারতের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এদেশে প্রায় ১১.৩ শতাংশ ব্যবসা রয়েছে তাদের। তবে খুব বেশি পিছিয়ে নেই চিনও। এক্ষেত্রে চিন ১০.৬ শতাংশ। অন্যদিকে চিনে যেসব দেশ ব্যবসা করে, তাদের মধ্যে ভারতের স্থান অনেকটাই নীচে। ২০১৮ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, ১২ নম্বর স্থানে রয়েছে ভারত। সেখানে আমেরিকা রয়েছে শীর্ষে। প্রায় ১৩.৭ শতাংশ। সেখানে ভারতের মাত্র ২.১ শতাংশ ব্যবসা রয়েছে চিনে। এদিক থেকে চিনা সামগ্রী বয়কটের মাধ্যমে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে যুদ্ধের পরিস্থিতি কতটা সুরাহা দেবে ভারতকে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
ভারতের বাজারে বড়সড় সমস্যার আশঙ্কা: ২০১৮ সালের ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের তথ্য অনুসারে, ভারতের মোট আমদানির ১৫.৩ শতাংশ হয় চিন থেকে। যেখানে ভারত সেদেশে রফতানি করে মাত্র ৫.১ শতাংশ। এমনকী, ওষুধের ক্ষেত্রে কাঁচামালের একটা বৃহৎ অংশও ভারত আমদানি করে চিন থেকে। এই পরিস্থিতিতে বয়কট ভারতের বাজারেও বড়সড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
চিনা বিনিয়োগ হারাতে পারে ভারত: গত দু’দশক ধরে এদেশহে চিনের বিনিয়োগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এফডিআই মার্কেটের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১০ সালে যেখানে ২১টি চিনা সংস্থা এদেশে বিনিয়োগ করেছিল, ২০১৯ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮। এছাড়াও ২০০৩ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ২২৫টি চিনা সংস্থা ভারতে বিনিয়োগ করেছে।