চিনা অ্যাপস নিয়ে ৩ বছর আগেই ছিল সতর্কতা, অপেক্ষায় ছিলেন মোদি!

চিনা অ্যাপস নিয়ে ৩ বছর আগেই ছিল সতর্কতা, অপেক্ষায় ছিলেন মোদি!

d547a63cc1990452e5b865d9fc6ad38e

নয়াদিল্লি: বছর তিন আগের কথা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস। কেন্দ্রীয় সরকার ৪২টি চিনা app কে 'ভয়ঙ্কর' ঘোষণা করেছিল। প্রধান কারণ – সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। ২০২০ সালের ১৫ জুন সীমান্ত সন্ত্রাস ঘটিয়ে ২০ জন সেনার প্রাণ নিয়েছে চিন। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর অর্থাৎ ৩০ জুন ৫৯টি 'ভয়ঙ্কর' চিনা app কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল মোদি সরকার। সীমান্ত সন্ত্রাস, ২০টি তাজা প্রাণ – বুক ফেটে যাচ্ছে সংবেদনশীল ভারতীয় জনজাতির।

এদিকে মোদি সরকার দাবি করছে চিনের উপরে 'ডিজিটাল সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' হয়েছে। কী অদ্ভুত যুক্তি, যা হওয়ার কথা ছিল তিন বছর আগে, ২০ জন সেনার প্রাণের বিনিময়ে তা আজকে সম্পন্ন হয়েছে। এই তিন বছর ধরে কী ভারতীয় জনজাতির জীবন সুরক্ষিত ছিল? এই তিন বছর ভারতীয়দের মোবাইল ফোন থেকে কত ডেটা (তথ্য) চুরি করেছে টিকটিক, শেয়ারইট, হেলো, ক্যাম স্ক্যানার …। কেন তারা ভারতে ব্যাবসা করার অনুমতি পেল? মোদি সরকার যাকে এক সময় ভয়ঙ্কর বলেছিল, সেই app গুলি তিন বছর ধরে ভারতে ব্যাবসা করল কী ভাবে? কোনও ড্রাগনের ভয়ে লুকিয়েছিল ৫৬ ইঞ্চি ছাতি'র প্রধানমন্ত্রী? গালওয়ানে ২০ সেনা মরতে মরতে প্রধানমন্ত্রীকে সাহস দিয়ে গিয়েছেন কী? আমরা জেনে নিতে পারি, প্রথম কারণ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক মনে করেছে এই app গুলি ব্যবহার করা হলে দেশের সাইবার সিকিউরিটি বিঘ্নিত হতে পারে। এখানে যে আইন কাজে লাগান হয়েছে তা হল, তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০০। ধারা 69A ।

এই চিনা app গুলি দেশের সার্বভূমত্ব, একতা, নিরাপত্তা, জনতার সুরক্ষার প্রতি ক্ষতিকর, তা সাফ জানান হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে। সূত্রের খবর, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে ভারতের cyber security coordination centre – এই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। তারপরই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইতিমধ্যেই ভারতে google playstore এবং apple appstore থেকে এই app গুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এয়ারটেল, জিও, ভোদাফন – ভারতের কোনও সার্ভিস প্রোভাইডার এই app গুলি রাখবে না। একমাত্র proxy server ছাড়া এই app গুলিকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু, তা আপনার সাইবার নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। তা , কতটা আইনত তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

চিনকে কোনও বার্তা দিতে চাইছে ভারত ? হ্যা অবশ্যই। ওই চিনা app গুলির বিকল্প ভারত পেতেও পারে, বা নাও পেতে পারে – কিন্তু ভারতের ৮০ কোটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য এই app market চিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে তখন, যখন ভারতে ইন্টারনেট এর দাম খুবই কম। অন্যান চিনা পণ্য কি ভারতের বাজারে ঢোকা বন্ধ হবে? হতেও পারে। তবে সেক্ষেত্রে ভারতকে চিনের সঙ্গে WTO বা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় লড়াই করতে হবে। কিন্তু, App মার্কেটে সেই বাধা নেই।

কী করবেন, যদি এখনও পর্যন্ত আপনার মোবাইলে কোনও চিনা app থেকে থাকে? আপনি যদি app delete না করে থাকেন তাহলেও কিছু যায় আসে না – কারণ app গুলি অকেজো হয়ে গিয়েছে। দেখে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে, এটাই আমার পরামর্শ, app গুলি মোবাইল থেকে delete করে ফেলুন – কিছুটা জায়গা বাড়বে।

তবে, এত কিছুর মাঝে এটা বলা প্রয়োজন কোভিড 19 এর জন্য tiktok PM Care ফান্ড এ 30 কোটি টাকা দিয়েছে। XaoMi, Hwai , Oppo, One+ প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে টাকা জমা দিয়েছে।Xaomi 10cr, Hwai 7cr, Oppo1cr. One+1cr. 'বাইট ডান্স' – যে চিনা কোম্পানি – টিকটক বা হেলো এর মত app তৈরি করে তারা ভারতের বাজারে প্রচুর ছেলে মেয়েকে চাকরি দিয়েছে। এই চিনা app গুলির অধিকাংশের better alternative বা ভাল বদলি আপনারা google play store পেয়ে যাবেন। যেমন গুগল ক্রোম সেরা ব্রাউজার, গুগল ড্রাইভ বা adobe scane ব্যাবহার করতে পারেন cam scanner এর বদলে। Tiktik এর বদলে বাজারে আসে গিয়েছে ভারতের তৈরি Chingari । হ্যাঁ। বাংলাতেও পাবেন।

তবু, একটি প্রশ্ন মোদি সরকারকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে, তা হল, ডেটা পাচারের অভিযোগ গোয়েন্দাদের থেকে পেয়েই চিনা app নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে – তিন বছর আগেই টনক নড়ে সরকারের? তারপরেও এতদিন সময় লাগল কেন? একটা Galwan এর জন্য অপেক্ষা করছিল সরকার?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *