ভারতে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির নেপথ্যে রয়েছেন কে?

ভারতে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির নেপথ্যে রয়েছেন কে?

হায়দরাবাদ: বিশ্বে করোনার প্রকোপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নাজেহাল অবস্থা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে করোনার টিকা আবিষ্কারের কাজ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটা এগিয়েছে। আশার আলো দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি চিন, অস্ট্রেলিয়া, ইজরায়েল, আমেরিকা প্রভৃতি দেশেও করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। সারা বিশ্বে ১২০টি ভ্যাকসিন ট্রায়াল চলছে মানুষের শরীরে। এই পরিস্থিতিতে ভারত চলতি মাসের শুরুর দিক থেকে একটি ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়ালে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদের ল্যাবে প্রি ক্লিনিক্যাল টেস্টিং অর্থাৎ মানবদেহের আগে বিভিন্ন পশুর দেহে পরীক্ষা করা হয়েছে। ভালো ফল পাওয়া গিয়েছে।

ভারত বায়োটেক, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি এবং আইসিএমআরের পক্ষ থেকে যৌথ উদ্যোগে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিনটির নাম দেওয়া হয়েছে কোভ্যাক্সিন। এই সংস্থা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ইতিমধ্যে নিজেদের নাম কিনে নিয়েছে। সব থেকে কম মূল্যের হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন এখান থেকেই তৈরি হয়েছে। জিকা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করে সংস্থাটি তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। তবে ভারতে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের নেপথ্যে রয়েছে কৃষ্ণ এলা।

এক সাক্ষাৎকারে ভারত বায়োটের ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ এলা বলেন, আমার প্রথমে টার্গেট ছিল, এগ্রিকালচার নিয়ে পড়াশোনা করে, কৃষিকাজ করা। কিন্তু আর্থিক চাপের কারণে একটি কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার এগ্রিকালচার বিভাগের বিক্রেতা হয়ে গেলাম। এই কাজটা করতে করতে হঠাৎ করেই রোটারি ফ্রিডম ফ্রম হাঙ্গার ফেলোশিপ পেয়ে আমেরিকা চলে যান।আমেরিকা থেকে পিএইচডি করে তিনি ১৯৯৫ সালে দেশে ফিরে আসেন।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আদৌ আমার দেশে ফিরে আসার কোনও ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু আমার মা আমাকে দেশে ফিরে আসতে বলেন। মা বলেছিলেন, যা করার দেশে এসে কথা করবে। আমি তখন একটা ব্যবসার চিন্তা করে দেশে ফিরে আসি। আমি খুব সস্তায় হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন তৈরি করা। কারণ সেই সময় ভারতে খুব চাহিদা ছিল। ভারতের চাহিদা ছিল সস্তায় হেপাটাইটিস বি-র প্রয়োজন। হায়দরাবাদে ছোট্ট ঘরে তিনি কিছু সরঞ্জাম নিয়ে ল্যাবরেটারি করেন। তৈরি হয় ভারত বায়োটেক।
হেপাটাইটিস বি-র জন্য প্রজেক্ট তৈরি করেন। ১২.৫ কোটি টাকার প্রস্তাব দেন। যেখানে হেপাটাইটিস বি-র ভ্যাকসিনে তৈরি করা হয়েছে। তখন হেপাটাইটিস বির ভ্যাকসিনের ৩০-৪০ ডলার। তিনি জানান, সেই সময় আমাদের কেউ সাহায্য করেনি। ২ কোটি টাকা আইডিবিআই ব্যাঙ্ক থেকে জোগাড় করি।
সারা ভারতে তিনি হেপাটাইটিস বির ভ্যাকসিন ৩৫ মিলিয়ন ডোজ বিক্রি করেছেন। প্রতি ডোজ ১০ টাকা দাম ধার্য করা হয়। তিনি সারা দেশে ৩৫০ থেকে ৪৫০ মিলিয়ন ডোজ বিশ্বের ৬৫টি দেশে বিক্রি করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 11 =