লেহ্ : সমান্তরাল এলাকার নদী ফুলে ফেঁপে বাড়ে বর্ষার জলে। পার্বত্য এলাকায় কিন্তু উল্টো। গ্রীষ্ম কালেই নদী ভয়ানক চেহারা নেয়। কারণ, বরফ গলে। ফুলে ফেঁপে ওঠে পাহাড়ি নদী। নদীর এই চরিত্রই চিন্তায় রাখছে চিনা সেনাকে। গালওয়ান উপত্যকায় পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ এর নিকটবর্তী যে জায়গায় ভারত-চিন সেনার সংঘর্ষ হয় তার ৫ কিলোমিটার পিছনে বিস্তৃত রয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পি এল এ) ক্যাম্প। কিন্তু, গালওয়ানে নদীর জল বাড়লে কী হবে? চিন্তায় রয়েছে চীনা কমান্ডার'রা।
ইতিমধ্যেই, স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যাচ্ছে পিছনের দিকে বেশ কিছু চীনা ক্যাম্প ভেসে গিয়েছে। ফেঁপে ওঠে পাহাড়ি নদীর পাশে ক্যাম্প করে বসে থাকা সহজ কাজ নয়। বিভিন্ন সূত্রের খবর, চিনা সেনা গালওয়ানে টানেল তৈরি করার চেষ্টা করছে। ওই টানেলে সেনারা লুকিয়ে থাকতে চায়। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে ওই টানেলে লুকিয়ে থাকা সুবিধাজনক হতে পারে বলে মনে করছে অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ। আবার ওই এলাকায় যোগাযোগের জন্য 'ফাইবার অপটিক্স' ব্যবহার করতে চাইছে পিএল এ – সেই খবরও শোনা গিয়েছে।
ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে বেজায় বিপদে চিন। যুদ্ধের জন্য একটি দেশের সব থেকে বেশি যা প্রয়োজন, তা হল খুব তাড়াতাড়ি বেশি সংখ্যক সেনাকে সীমান্তে পৌঁছে দেওয়া। এই মুহূর্তের চিনের পক্ষে তা সম্ভব নয়। কারণ, চিনের স্থল সেনা, নৌ-বাহিনী এবং বায়ুসেনা তাইওয়ান নিয়ে চরম ব্যস্ত। চিনের বায়ুসেনা নিরন্তর তাইওয়ানের আকাশে উড়তে চেষ্টা করছে। নৌ-সেনা দক্ষিণ-চিন সাগরের দখলদারি রক্ষা করতে ব্যস্ত।
দক্ষিণ-চিন সাগরে ছয়টি দেশের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে চিন – তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া। চিন সেনা দক্ষিণ-চিন সাগরে কৃত্তিম দ্বীপ তৈরি করেছে। সেখানে সেনা যুদ্ধাভ্যাস করছে। এইখানেই শেষ নয়, পূর্ব-চিন সাগরে জাপানের সঙ্গেও ঝামেলা বাধিয়েছে চিন। চিনা যুদ্ধ জাহাজ কিছুদিন আগে জাপানের জলসীমায় প্রবেশ করে। চিনকে শিক্ষা দিতে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে জাপান। তবে, বেজিংয়ের সব থেকে বড় চিন্তা হংকং। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে হংকং-য়ের পরিস্থিতি আরও উত্তাল হোক, এমন কখনই চাইবে না বেজিং।
এই পরিস্থিতিতে গালওয়ানে কী করতে পারে চিন। তিন-তিনটি সেনা বৈঠক হয়ে গিয়েছে। তবুও গালওয়ানে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে চিনা সেনা। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন – সময় কিনছে চিন। শীত পর্যন্ত এখানেই থাকতে চায় পি এল এ। তৈরি ভারতীয় সেনাও।