জয়পুর: দলের সঙ্গে মত পার্থক্য থাকলেও, তিনি যে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিচ্ছেন না, তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন শচীন পাইলট৷ অন্যদিকে, গতকালই উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছে তাঁকে৷ কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি পদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে পাইলটকে৷ পাইলট ও তাঁর অনুগামীদের বিধায়কদের বিধায়ক পদ খারিজের নোটিসও দেওয়া হয়ে গিয়েছে৷ অথচ এর পরেও দলের পর্যবেক্ষক বলছেন, পাইলটের জন্য কংগ্রেসের দরজা এখনও খোলা আছে।
এদিন সকালেই পাইলট জানিয়েছিলেন ‘বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না তিনি৷ তাঁর কথায়, আমি এখনও কংগ্রেস সদস্য। বিজেপির সঙ্গে আমার নাম জুড়ে আমাকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গান্ধী পরিবারের সদস্যদের নজরে আমাকে ছোট দেখানোর চেষ্টা চলছে।’’ রাজস্থানের কিছু নেতা তাঁর বিরুদ্ধে এই জল্পনা উস্কে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তাঁর৷ এমনকী সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাইলট এও বলেছেন, রাজস্থানে বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আনতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন তিনি৷
এদিকে পাইলট বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন না স্পষ্ট করার পরই তাঁকে এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কদের জয়পুরে ফিরে আসার কথা বলেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা৷ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি’র সঙ্গে যাবতীয় আলাপ আলোচনা বন্ধ করে ঘরে ফিরে আসুন৷’’ সাংবাদিক বৈঠকে সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘আমরা শচীন পাইলটের বিবৃতি শুনেছি৷ তিনি বিজেপি’তে যোগ দিচ্ছেন না বলে স্পষ্ট করেছেন৷ আমি তাঁকে বলতে চাই, আপনি যদি সত্যই বিজেপিতে যোগ দিতে না চান, তাহলে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের সুরক্ষা বলয় থেকে বেরিয়ে আসুন৷ বিজেপি’র সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ করে ফিরে আসুন নিজের ঘর জয়পুরে৷’’
সুরজেওয়ালার দাবি, শচীন পাইলট এবং তাঁর অনুগামী বিধায়করা বর্তমানে যে পাঁচতারা হোটেল রয়েছেন, সাম্প্রতিক অতীতে তা বিদ্রোহী বিধায়ক এবং বিজেপি নেতাদের আখড়া হয়ে উঠেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেটলটের সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা শচীন পাইলটের বিবাদের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে মরুরাজ্যের রাজনীতি৷ উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে৷ কিন্তু এদিন রাজস্থানে কংগ্রেস ইনচার্জ অবিনাশ পান্ডে টুইট করে বলেন, ‘‘কংগ্রেসের দরজা তার জন্য বন্ধ হয়নি৷ ভগবান যেন তাঁকে শুভবুদ্ধি দেন এবং তিনি যেন তাঁর ভুল বুঝতে পারেন৷ আমি আশা করি বিজেপি’র পাতা ফাদে পা দেবেন না তিনি৷’’
প্রসঙ্গত, গত ১০-১৫ বছরে পাইলটকে একাধিক সুযোগ দিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী৷ সাংসদ থেকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী, প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি, এবং সম্প্রতি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ৷ বিজেপি বা কংগ্রেস কোনও দলেই কোনও নেতাকে এতটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সে দৃষ্টান্ত কিন্তু বিরল৷