লখনউ: করোনা আবহেই ভগবান শ্রী রামচন্দ্রর জন্মভূমি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের প্রস্তুতি তুঙ্গে। তারপরেই শুরু হবে বহু বিতর্কিত ও বহুচর্চিত রাম মন্দির নির্মাণ পর্ব। আগামী ৫ আগস্ট মহাসমারোহে এই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের দিন নির্ধারিত। করোনা সতর্কতা বিধি মেনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় রয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উধব ঠাকরে এবং বিহারের সিএম নীতীশ কুমারের মত বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
এই রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা ঘিরে দীর্ঘ ৩০ বছর প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন অগনিত ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এমন একটি মহৎ কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তাঁর পরিবার গর্বিত বলে উল্লেখ করে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে এএনআই-কে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন প্রধান স্থপতি চন্দ্রকান্ত সোমপুরার পুত্র নিখিল সোমপুরা। তথ্য অনুসারে দীর্ঘ ৩০ বছর আগে ১৯৮৮ সালে যখন এই মন্দিরের নকশা তৈরি হয় তখন এর উচ্চতা ১৪১ফুট রাখা হয়েছিল। সেই নকশায় দুটি অতিরিক্ত মন্ডপ জুড়ে দিয়ে এখন মন্দিরের উচ্চতা ১৬১ ফুট করা হয়েছে। তবে আগের পরিকল্পনা অনুসারে খোদাই করে রাখা স্তম্ভ এবং পাথরগুলিই নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হবে। নির্মান কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এল অ্যান্ড টি) সংস্থাকে। ইতিমধ্যেই সমস্ত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামসহ নির্মাণ কর্মীদের একটি দল পৌঁছে গেছে নির্মান স্থলে। সম্পূর্ণ মন্দির প্রস্তুত হতে ৩ থেকে সাড়ে তিন বছর সময় লাগবে।
তবে এসবের মধ্যে নজরকাড়া বিষয়টি হল, ভূমি পূজানের দিন ওই পবিত্রস্থানে ৪০ কেজি রুপোর ইঁট স্থাপন করা হবে। রাম মন্দির ট্রাস্টের মুখপাত্র নৃত্য গোপাল দাস জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের সময় গর্ভগৃহের ভিতরে পাঁচটি রৌপ্য ইট স্থাপন করা হবে। এই পাঁচটি ইঁট হিন্দু পুরাণ অনুসারে পাঁচটি গ্রহের প্রতীক। রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে ৩ আগস্ট থেকে তিন দিনব্যাপী বৈদিক আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রামণের ভয়াবহ রূপ যা ভারতেও বাস্তবিক অর্থেই দৃশ্যমান, এমন পরিস্থিতিতে রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা বিরোধিদের বহু কটাক্ষ ও প্রশ্নের সম্মুখীন। তবে ভগবান রামকে নিয়ে কোনো রাজনৈতিক বিতর্কে যেতে রাজী নন শাসকদল। বরং তাঁদের অনেকেরই দৃঢ় বিশ্বাস এই অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ ভারত তথা বিশ্বজূড়ে করোনা ভাইরাসকে দুর্বল করতে পারে। অনেক ভক্তরাও হয়তোবা এমনই বিশ্বাস রাখেন। তাঁদের এই বিশ্বাস বিশ্ব জুড়ে করোনার মত মহামারী নিয়ন্ত্রণে কতদূর বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে এখন তারই অপেক্ষা।