দেরাদুন: আর পাঁচজনের মতো না হলে সমাজে যে কোনও মানুষের অপমানের সীমা থাকে না। বামনাকৃতির মানুষরাও এর ব্যতিক্রম নয়। এমন মানুষরা প্রায়ই অনেকের হাসি ঠাট্টার পাত্র হন। এবার নিন্দুকদের উপযুক্ত জবাব দিলেন ৩ ফুটের আরতি। মাত্র ৩ ফুট উচ্চতা নিয়ে আইএএস পরীক্ষায় পাশ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি রাজস্থান ক্যাডারের আইএএস অফিসার।
ছোট থেকেই নিজের উচ্চতার জন্য জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল আরতি ডোগরার। অনেক জায়গাতেই বাঁকা কথা শুনতে হত তাঁকে। সেই সময়ই স্থির করছিলেন জীবনে কিছু করে দেখাবেন তিনি। মুখে নয়, নিজের কাজের মাধ্যমে জবাব দেবেন তিনি। আজ তিনি দেশের বামনাকৃতির মানুষগুলোর প্রতিনিধি তো বটেই। অন্যদেরও রোল মডেল। সমাজ যখন আরতিকে নিয়ে হাসি তামাশা করত তখন পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েকে সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন আরতির মা-বাবা।
আরতির বাবা রাজেন্দ্র ডোগরা ভারতীয় সেনার একজন অফিসার। মা কুমকুম ডোগরা স্কুল শিক্ষিকা। ফলে ডিসিপ্লিন ও পড়াশোনার পরিবেশ ছোট থেকেই পেয়েছিলেন আরতি। তাঁর জন্মের সময়ে ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন যে, তিনি অন্য বাচ্চাদের মতো নন। আর পাঁচজনের মতো সাধারণতভাবে স্কুলে পড়াশুনা করতে পারবেন না তিনি। শেষমেশ দেখা গেলও তাই। তিনি বড় হলেন। কিন্তু উচ্চতা বাড়ল না। এই নিয়ে বারবার বিদ্রুপের শিকার হয়েছেন তিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি আরতি। হাল ছেড়েননি তাঁর মা ও বাবাও। প্রতিটি পদক্ষেপে সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। মা ও বাবার সেই কষ্ট বিফলে যেতে দেননি আরতি। এখন তো বিখ্যাত তিনি। সকলের মুখেই তাঁর নাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁকে পছন্দ করেন।
অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে নিজের কাজটুকু করেন আরতি। কোন মানুষকেই কখনও অবজ্ঞা করেননি। তাঁকে জীবনভর যা সহ্য করতে হয়েছে, তা যাতে আর কাউকে সহ্য করতে না হয়, তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। আরতির কাছে প্রত্যেকেই সমান। আর সেই কারণেই সবার প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছেন আরতি।