কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে চর্ম সংস্থাগুলি, কাজ হারিয়ে বেকার ৭৫ হাজার শ্রমিক

কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে চর্ম সংস্থাগুলি, কাজ হারিয়ে বেকার ৭৫ হাজার শ্রমিক

f25a5544e3f567704398b3762a4353a7

ভেলোর: করোনা পরিস্থিতিতে চরম সংকটে পড়েছেন ভেলোর জেলায় চর্মশিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা৷ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া অতিমারির জেরে অধিকাংশ চর্ম সংস্থাতেই কমেছে সাপ্লাই অর্ডার৷ বরাত কমায় জেলার লেদার সেক্টরগুলিতে শুরু হয়েছে কর্মী ছাঁচাই৷ যার জেরে ভয়ানক দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন শ্রমিকরা৷  

আরও পড়ুন- ভারতে করোনা-টিকার বণ্টন কীভাবে? জানাল সিরাম ইনস্টিটিউট

চামড়ার জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থা টান্নেরিস এবং তার সহকারী সংস্থাগুলি তামিলনাডুর ভেলোর, তিরুপাথুর এবং রানীপেট জেলায় প্রায় দেড় লাখ কর্মসংস্থান দিয়েছে৷ যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই হলেন মহিলাকর্মী৷ রাজ্যের অধিকাংশ লেদার ফার্মগুলি রয়েছে আম্বুর, ভানিয়ম্বদী, রানীপেট, বিশারাম এবং পেনাম্বুট অঞ্চলে৷ কিন্তু করোনা অতিমারি এই সকল লেদার সংস্থার কর্মীদের উপর অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অতিমারীর জেরে এই সকল সংস্থায় শুরু হয়েছে কর্মী ছাঁটাই৷ লেদার সংস্থাগুলিতে কর্মী সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে৷ 

আরও পড়ুন-  সেদিন নিজে ভেঙেছিলেন স্কুল, আজ সেই স্কুল-বাড়ি নির্মাণে হাত লাগলেন প্রাক্তন মাওবাদী

তামিলনাড়ু ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের সাধারণ সম্পাপক জে রুবান বলেন, ‘‘গত মে মাসে লকডাউন বিধি শিথিল হওয়ার পর বহু সংস্থাই পুনরায় কাজ শুরু করেছিল৷ কিন্তু সর্বশক্তি দিয়ে নয়৷ অধিকাংশ সংস্থাই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে চলছে৷ ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন৷’’ যার ফলে ব্যাপক আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন কর্মহীন চর্ম শ্রমিকরা৷ পরিস্থিতির সঙ্গে ক্রমাগত যুদ্ধ করে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের৷ পাচাইকুপ্পনের বাসিন্দা বছর চল্লিশের এন কবিতা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘গত ২৮ বছর ধরে একটি জুতো তৈরির কারখানায় কাজ করতাম আমি৷ এখন সপ্তাহে পাঁচ দিন করে কাজে ডাকছে আমাকে৷’’ দুই সন্তানের মা কবিতার মাথায় রয়েছে ঋণের বোঝা৷ প্রতি মাসে ৯,২৩৫ টাকা গৃহঋণ দিতে হয় তাঁকে৷ সব মিলিয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন তিনি৷ কবিতা বলেন, ‘‘আমি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে গিয়েছিলাম৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যাতে কিস্তির টানা না নেওয়া হয়, সেই আবেদন জানিয়েছি৷’’ 

আরও পড়ুন- মাস্ক পরেনি, তাই গ্রেফতার ছাগল! থানায় তুলে নিয়ে গেল যোগীর পুলিশ

শ্রমিক স্বার্থে কাজ করা এনজিও ‘সিভিডিপ’-এর প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর প্রদীপ কৃষ্ণণ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের উপর এই অতিমারির প্রভাব ব্যাপক৷ আন্তর্জাতিক স্তরে মাল সরবরাহের বিষয়টি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ চর্মশিল্পে কাজ করা শ্রমিকদের অধিকাংশই সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষ৷ তাঁদের হাতে বিকল্প কোনও কাজও নেই৷’’ এক কথায় তাঁদের জীবন অনেকটাই বদলে দিয়েছে করোনা পরিস্থিতি৷ কঠিন হয়ে উঠেছে তাঁদের বেঁচে থাকার লড়াই৷ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে গিয়েছেন ৭৫ হাজার চর্ম শ্রমিক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *