চেন্নাই: দক্ষিণী রাজ্যগুলি যে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে কেন্দ্রের ‘ত্রিভাষা নীতি’র বিরোধিতা করবে, তা খানিকটা অনুমেয় ছিল৷ প্রত্যাশিত পথেই প্রথম রাজ্য হিসাবে কেন্দ্রের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করল তামিলনাড়ু৷ কেন্দ্রের ত্রিভাষা নীতির বদলে দ্বিভাষা নীতি মেনে চলার পক্ষেই সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী ইডাপ্পাডি কে পালানিস্বামী৷
আরও পড়ুন- যোগীর রাজ্যে ‘বেপাত্তা’ প্রায় ১২০০ করোনা রোগী! হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন
তিন পাতার একটি বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কখনই ত্রিভাষা নীতি মঞ্জুর করবে না৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনা করে দেখুক৷ রাজ্য সরকারগুলোকে তাদের নিজস্ব নীতি মেনে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রবর্তন করার সুযোগ দেওয়ার হোক৷’’ ওই বিবৃতিতে পালানিস্বামী আরও বলেন, ‘‘নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে ত্রিভাষা ফর্মুলার কথা বলা হলেও, রাজ্য তা মেনে নেবে না৷ আম্মা (জয়ললিতা)-র দেখানো পথে এ রাজ্যে দ্বিভাষা নীতিই মেনে চলা হবে৷’’ দীর্ঘ দিন ধরেই এআইএডিএমকে সহ তামিলনাড়ুর মানুষ এবং প্রতিটি রাজনৈতিক দল দ্বিভাষা নীতিকেই সমর্থন জানিয়ে এসেছে৷
আরও পড়ুন- মোদী থাকলে আমি নেই! উমার মন্তব্যে রাম-বিতর্ক! ভেস্তে যাবে ভূমি পুজো?
কেন্দ্রের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা নিজের মাতৃভাষাতেই পড়াশোনা করতে পারবে। এরপর তাদের ৩টি ভাষা শিখতে হবে। এই ভাষাগুলি নির্বাচন করার ক্ষমতা থাকবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির হাতে। কোনও রাজ্যের উপর কোনও ভাষা চাপিয়ে দওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রের এই নীতিতে কৌশলী চাল দেখছে তামিলনাড়ু৷ তারা মনে করছে, এই নীতির মাধ্যমে আদতে সুকৌশলে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী বলেন,‘‘ত্রিভাষা নীতি অবাক করার মতো৷ এটি খুবই দুঃখজনক। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, এই নীতি পুনর্বিবেচনা করুন। রাজ্যগুলিকে নিজেদের মতো নীতি নির্ধারণ করার অধিকার দিন। আমাদের রাজ্য কয়েক দশক ধরে দ্বিভাষা নীতি মেনে আসছে। আর তাতে কোনও ব্যতিক্রম হবে না।”
আরও পড়ুন- করোনা আক্রান্ত দেশের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী, হাসপাতালে ভর্তি ইয়েদুরাপ্পা
তিনি আরও বলেন, ‘‘১৯৬৮ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিএন আন্নাদুরাই রাজ্য বিধানসভায় একটি প্রস্তাব এনেছিলেন৷ যেখানে দ্বিভাষা নীতির কথা বলা হয়৷ এই নীতি অনুযায়ী তামিল এবং ইংরেজি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷ বাদ দেওয়া হয় হিন্দিকে৷’’
আরও পড়ুন- আরও বাড়ছে টিভি দেখার খরচ, নয়া নিয়মে অনড় ট্রাই
এর আগে নেহেরুর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার হিন্দিকে তামিলনাড়ুর সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়৷ বিক্ষোভের জেরে পিছিয়ে আসতে হয় কংগ্রেসকে। এমনকী কংগ্রেসের এই পদক্ষেপের জেরেই তাদের হারিয়ে ক্ষমতায় চলে এসেছিল করুনানিধির ডিএমকে৷