মুম্বই: দুদিনের টানা বৃষ্টি ও ঝড়ে বিধ্বস্ত দেশের বামিজ্যনগরী। প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার তোড়ে মুম্বইয়ের পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়ে ওঠে। বুধবার সন্ধেয় ঝড়ের গতিবেগ দাঁড়ায় প্রায় ১০৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ও বৃষ্টি মুম্বই পুলিশ এবং মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের কপালের ভাঁজ চওড়া করে। ঠাকরে মুম্বইবাসীকে অনুরোধ করেন যাতে তারা বাড়ির বাইরে না বেরোন। টুইটারে ছবি ও মেসেজের বন্যা বইতে থাকে। দেখা যায় ঝড়ের তাণ্ডবে বন্দরে ক্রেন ভেঙে পড়ার ছবি, ছাদ ও সানশেড উড়ে যাওয়ার ছবি, রাস্তায় উল্টে পড়ে থাকা গাড়ি এবং গাছ পড়ে থাকার ছবি।
মুম্বইয়ের জনজীবনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। শহরের বাস পরিষেবা এবং বিদ্যুৎ পরিষেবাও ব্যাহত হয়। পার্শ্ববর্তী রায়গড় জেলার জওহরলাল নেহরু পোর্ট ট্রাস্টে থাকা তিনটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্রেন প্রবল হাওয়ার তোড়ে ভেঙে পড়ে। যদিও এর ফলে কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন সূত্রে খবর শহরের জল সরবরাহের মূল উৎস দুটি লেকের একটি বিহার লেকে জল উপচে পড়ে।
মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যথাসাধ্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে টুইট করে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে তিনি মুম্বই ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন এবং টানা বৃষ্টির পূর্বাভাসের দিকে তাকিয়ে আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে এই টানা ভারী বৃষ্টি আপাতত জারি থাকবে। মুম্বই ও তার সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে শহরবাসীকে বাড়িতে থাকার আবেদন জানিয়ে এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করে টুইট করেছেন উদ্ধব ঠাকরের ছেলে তথা রাজ্যের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে টুইট করেছেন। মুম্বইরেনস হ্যাশট্যাগ দিয়ে একই বার্তা মুম্বই পুলিশের তরফেও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ১০০ ডায়াল করতেও অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে গোটা শহরে প্রায় ২৩০ মিলিমিটার জল দাঁড়িয়ে গেছে, ২০০৫ সালের পর যা এই প্রথম। উপচে পড়েছে মিঠি নদীর জল এবং তা বিপদসীমার ওপরে বইছে বলে জানিয়েছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। এছাড়াও বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে মহারাষ্ট্রের পুণে, সাতারা, কোলাপুর জেলাগুলিও।