নয়াদিল্লি: লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা প্রতিষেধক তৈরির সাফল্যের দিকে এগোচ্ছে অক্সফোর্ড৷ সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের দোরগোড়ায় এই ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে ভারতে৷ ভ্যাকসিন সফল হলে অক্সফোর্ড থেকে ভারতের বাজারে ১০ কোটি ভ্যাকসিন আনার ব্যবস্থা করছে সিরাম ইনস্টিটিউট৷ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের কথা মাথায় রেখে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের দাম ন্যূনতম মূল্য রাখা হয়েছে৷
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ইতিমধ্যেই সুখবর দিয়েছে সিয়ারাম ইন্সটিটিউট৷ জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে বাজারে আ,বে অক্সফোর্ডের টিকা৷ ভ্যাকসিন সর্বোচ্চ দাম হতে পারে ৩ ডলার কাছাকাছি৷ ভারতীয় অর্থমূল্যে যা ২২৫ টাকার কাছাকাছি৷ আগামী বছরের শুরুতেই এই করোনা প্রতিষেধক বাজারে আসতে পারে৷ প্রথম ধাপে ভারতের বাজারে ১০ কোটি ভ্যাকসিন আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে৷ ভারত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলির কথা মাথায় রেখে দাম কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড৷
করোনা প্রতিষেধক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যেই একটা উদ্বেগ সকলকেই তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিষেধক আবিষ্কার হলেও তার দাম ও জোগানের চিন্তা করছেন সব দেশের প্রশাসনিক কর্তারা। বিশেষত তৃতীয় বিশ্ব তথা উন্নয়নশীল দেশগুলির কপালের ভাঁজ চওড়া হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি সুখবরের সন্ধান দিল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। ২০২১ সালের মধ্যে ভারতসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলিতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন করোনা প্রতিষেধকের ডোজ পৌঁছে দিতে বিশেষ যৌথ উদ্যোগ নিল বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং GAVI ভ্যাকসিনস।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং নোভাভ্যাক্সের প্রতিষেধকসহ তালিকাভূক্ত প্রতিষেধকের দাম পড়বে প্রতি ডোজ ৩ ডলার করে। একটি বিবৃতি দিয়ে GAVI-র তরফে জানানো হয়েছে, পৃথিবীর ৯২টি দেশে এই প্রতিষেধক পাওয়া যাবে GAVI-র কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্টের মাধ্যমে। এই কাজের জন্য ব্যয় হওয়া অর্থ GAVI কে জোগান দেবে গেটস ফাউন্ডেশন। তা দিয়ে সিরাম ইনস্টিটিউটকে সহায়তা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। গেটস ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি GAVI, গরীব দেশগুলিতে প্রতিষেধকের সহজলভ্যতা বাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। এটি একটি বিশ্বজনীন পাবলিক প্রাইভেট স্বাস্থ্য উদ্যোগ।
বিশ্বজুড়ে করোনা প্রতিষেধক দ্রুত এবং সহজ জোগান দেওয়ার কর্মসূচি কোভ্যাক্সের যৌথ নেতৃত্বে রয়েছে এই সংগঠন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনের সঙ্গে এই কর্মসূচিতে রয়েছে এই সংস্থা। ২০২১-এর শেষে ২ মিলিয়ন সম্মতিপ্রাপ্ত এবং কার্যকরী করোনা প্রতিষেধক বিলির লক্ষ্য রয়েছে কোভ্যাক্সের। এর মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে ভারত করোনা আক্রান্তের সংখ্যার হিসেবে ২০ লক্ষ পার করে ফেলেছে।
সংক্রমণের তালিকায় এর ঠিক ওপরে রয়েছে মাত্র দুটি দেশ, ব্রাজিল ও আমেরিকা। ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ২.৮ মিলিয়ন যেখানে আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ মিলিয়নের কাছাকাছি। ২৮ জুলাই ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫ লক্ষ, সেখানে নতুন ৫ লক্ষ আক্রান্ত হয়েছে মাত্র ৯ দিনে। রোজ গড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছেছে। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১৩.২৮ লক্ষ ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চল্লিশ হাজারের ওপর মানুষ মারা গেছেন। মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং উত্তরপ্রদেশ দেশের এই পাঁচ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।