নয়াদিল্লি: মাস দু’য়েক আগের কথা৷ যাবতীয় কলূষতা হারিয়ে নীল টলটলে হয়ে উঠেছিল যমুনার জল৷ যমুনার এক অন্য রূপ দেখেছিল দেশের মানুষ৷ কিন্তু আনলক পর্ব শুরু হতেই ফের দূষণ বাড়তে শুরু করেছে গঙ্গার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই পবিত্র শাখা নদীতে৷
আরও পড়ুন- রেল কর্মচারীদের জন্য সুখবর, ১৩ লক্ষ পরিবারকে বড় উপহার কেন্দ্রের
লকডাউন শুরু হওয়ার পর দিল্লি পলিউশন কন্ট্রোল কমিটি (ডিপিসিসি) জানিয়েছিল, ৩৩ শতাংশ দূষণ কমেছে যমুনার জলে৷ কিন্তু লকডাউন শিথিল হয়ে কলকারখানা খুলতেই যমুনায় মিশতে থাকে বিষ৷ এএনআই-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, জুলাই মাসে ওখলা ব্যারেজে যমুনার জলে দেখা গিয়েছিল বিষাক্ত ফেনা৷ দূষণের মাত্রা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ার জন্যই এই ফেনার উৎপত্তি৷ এই বিষাক্ত ফেনা যমুনার তীরে বসবাসকারী মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক৷
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও যমুনার জলে বিপদের সঙ্কেত দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)৷ ২০১৭ সালে হু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট প্রায়োরিটি প্যাথোজেনের প্রথম তালিকা প্রকাশ করে৷ যা মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ হু-র প্রকাশিত তালিকায় নয়া অ্যান্টিবায়োটিকগুলি জরুরি ভিত্তিতে তিনটে ভাগে ভাগ করা হয়৷ সংকটপূর্ণ (critical), উচ্চ অগ্রাধিকার (high) এবং মধ্যম অগ্রাধিকার (medium priority)৷ ওই বছরই দিল্লি আইআইটি-র একটি গবেষণায় বলা হয়, যমুনার জলে তৈরি হয়েছে মাল্টি ড্রাগ প্রতিরোধকারী ব্যাকটেরিয়া৷ যা হু’র নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী সংকটপূর্ণ ক্যাটাগরিতে পড়ে৷
আরও পড়ুন- করোনা-সঙ্কটে বন্ধের মুখে দেশের একাধিক বেসরকারি স্কুলের দরজা
রিপোর্ট বলছে, এই ব্যাকটিরিয়াগুলি কার্বাপিনেম এবং তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিনের মতো প্রচুর সংখ্যক অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এগুলি রক্ত প্রবাহের সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক এবং প্রায়শই মারাত্মক সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
কল কারখানার বর্জ্য, রাসায়নিক, আবর্জনায় যমুনার অবস্থা সঙ্গীন। সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের তরফে যমুনা দূষণ মুক্ত করার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ করা হলেও বিশেষ লাভ হয়নি৷ কিন্তু প্রকৃতি দূষণমুক্ত হলে নদীর জলও শুদ্ধ হবে, সেটাই প্রমাণ করেছে লকডাউন। আবর্জনাহীন টইটম্বুর যমুনার ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে যমুনাকে বহুদিন দেখেনি দিল্লিবাসী। কিন্তু আনলক হতেই ফের বদলে গেল চিত্র৷ বিপজ্জনক হয়ে উঠল যমুনা৷