মুম্বই: সমাজের কোনো স্থানই মেয়েদের হাতের বাইরে নয় আজ। আকাশ থেকে সমুদ্র, অন্তরীক্ষ থেকে পাতাল সর্বত্র মহিলাবাহিনীর দাপট আজ সর্বজনবিদিত। যেকোনও কাজে মেয়েরা যে অগ্রগণ্য তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন তারা সর্বক্ষেত্রে। নতুন নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছেন তাঁরা নিজেদের পরিশ্রম, একাগ্রতার মাধ্যমে। এবার সেই দক্ষতার মুকুটে এক নতুন পালক জুড়লেন মহারাষ্ট্রের এক মহিলা বাহিনী। স্বরগান্ধার ঢোল পতকের মহিলা সদস্যরা প্রমাণ করে দিয়েছেন ছেলেদের চেয়ে কোনও অংশে কম নন তাঁরা।
দক্ষ হাতে শুধু ঢোল বাজানোই নয় ভারী ভারী ঢোল বয়ে শোভাযাত্রায় আনন্দ করে বাজিয়ে মানুষের মন কাড়তে এক্কেবারে পটু তাঁরা। আর এই কাজটি তাঁরা করে থাকেন নিজেদের আগ্রহেই। বয়সের কোনও বাধাই সেখানে বাধা নয়। বাহিনীর সর্বকনিষ্ঠার বয়স এগারো আর সবচেয়ে বয়স্ক সদস্যার বয়স চল্লিশের কোঠায়। কিন্তু ঢোল বাজানোয় দুজনেই সমানভাবে উপভোগ করেন তাঁরা। একেকজন একেক পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষ গণেশ পুজোর সময় এগারোটা দিন নিজেদের সব ভুলে ঢোল ঘিরে মেতে ওঠেন নেশার মাতনে। কেউ সফটওয়্যার প্রোগ্রামার, কেউ পড়ুয়া, কেউবা আবার শুধুমাত্র গৃহবধূ। কিন্তু এ কটাদিন তারা সবাই প্রমিলা ঢোলবাহিনীর সদস্য।
এহেন বাহিনীটিকে গর্বের সঙ্গে রক্ষা করেন স্বরগান্ধারের পুরুষ সদস্যরা। তাঁরা ঘিরে রাখেন তাঁদের একান্ত অস্মিতার এই দলটিকে যাতে কোনও অযাচিত সমস্যা ছুঁতে না পারে প্রমিলাবাহিনীকে। তবে দলের সদস্যরা রক্ষা করলে কি হবে? সমাজ কি কখনও ছেড়ে কথা বলেছে যারা স্রোতের বিপরীতে গা ভাসিয়েছেন তাঁদের? কখনই নয়। বরং সমাজের কটুকাটব্য শুনে শুনেই আরও পোক্ত আরও দৃঢ় হয়েছে এই মহিলাদের মনের জোর। তবে সমালোচনা যদি থাকে প্রশংসাও কম পাননি তাঁরা। স্পেনে গেছিলেন নিজেদের দল নিয়ে এই মহিলারা। পেয়েছেন প্রচুর জনসমর্থন।
দেশের বাইরে গিয়ে দেশের থেকেও বেশী মানুষের মন জয় করেছেন। বেড়েছে মনের জোর। সবচেয়ে বড় কথা বাড়ির লোকেরাও কিন্তু সমানভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের দিকে। তাই আর পিছনে তাকিয়ে নয় সামনের দিকে তাকিয়েই এগিয়ে চলার রাস্তা ধরেছেন এই প্রমিলাবাহিনী। স্বয়ং গণপতি রয়েছেন তাদের সঙ্গে।