নতুন দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনেকগুলি ভবিষ্যত প্রকল্পের মধ্যে একটি হল বুলেট ট্রেন। অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন এই ট্রেন চালু করা তাঁর ‘স্বপ্নের প্রোজেক্ট’ বললেও অত্যুক্তি হয় না। এই প্রোজেক্টের দায়িত্ব হয়েছিল এক জাপানি সংস্থাকে। প্রযুক্তিগত বিষয়ের দায়িত্বে ছিল তারা, অন্যদিকে জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব ছিল কেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের। প্রত্যাশা ছিল, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেই শেষ হবে বুলেট ট্রেনের প্রোজেক্ট। কিন্তু এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, বুলেট ট্রেন চলতে আরও অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগবে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব জাপানি সংস্থা দায়িত্বে ছিল তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই নতুন ‘ডেডলাইন’ নির্ধারিত হয়েছে ২০২৮ সালের অক্টোবর মাস। অর্থাৎ পুরনো ডেডলাইনের থেকে আরও পাঁচ বছর দীর্ঘায়িত হয়েছে প্রোজেক্ট নির্মাণের সময়সীমা। কেন এই বিলম্ব? সংবাদসংস্থার সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাপানি সংস্থার কম অংশীদারি, আগ্রহের অভাব তো আছেই, সঙ্গে নিলামে দর আকাশছোঁয়া হওয়ায় টেন্ডার না পাওয়া, জমি অধিগ্রহণের সমস্যাও বড় কারণ। এই বিশাল প্রোজেক্টের জন্য মুম্বই থেকে আহমেদাবাদ ৫০৮ কিমি রাস্তা হাইস্পিড রেল ট্র্যাক বানানো চলছে। এর জন্য জাপানের কাছে ০.১ শতাংশ হারে ঋণ নেওয়া হয়েছে।
রিপোর্ট বলছে, এই দীর্ঘ পথের মধ্যে ২১ কিমি সবথেকে কঠিন। কারণ এই রাস্তাটুকু মাটির তলায় হতে চলেছে। তার মধ্যে আবার সাত কিমি থাকবে সমুদ্রের তলায়। এই কাজের জন্য এক বিশেষ ধরনের প্রযুক্তি এবং মেশিনপত্র চাই। কিন্তু মুশকিল হল, সংশ্লিষ্ট জাপানি সংস্থা এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে আদৌ রাজি নয়। মূলত এই কারণেই গোটা প্রোজেক্ট ঝুলে আছে। সংস্থাটি থেকে ১১টি টেন্ডারের জন্য নিলাম ডাকা হয়েছিল যেখানে আনুমানিক ৯০ শতাংশ দাম বেড়ে যায়। কোনও ভারতীয় সংস্থা টেন্ডারে উৎসাহিত না হওয়ায় সমস্যা আরও বেড়ে যায়। জমি অধিগ্রহণের সমস্যাও কম নেই। মহারাষ্ট্রে মোট ৪৩০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করার কথা সেখানে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১০০ হেক্টর অধিগ্রহণ করা গেছে। ওদিকে গুজরাটে ১০০০ হেক্টর অধিগ্রহণের প্রস্তাব রয়েছে যা সম্পূর্ণ হতে আরও এক বছর লাগবে বলে খবর।