বেঙ্গালুরু: চিনদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর নয় মাস কেটে গেছে। ইতিমধ্যে দুনিয়া জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ সংক্রামিত হয়েছেন। মৃত্যুও হয়েছে লক্ষাধিক। কিছি কিছু দেশ যেমন দফায় দফায় লকডাউন করে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরছে আবার কোথাও সংক্রমণ কমার বদলে বেড়েই চলেছে। যেমন, আমেরিকা, ব্রাজিল এবং ভারতে সংক্রমণ কমার নামই নেই। সুস্থ হওয়ার হার বাড়লেও সঙ্গে বেড়ে চলেছে সংক্রমণও। এমতাবস্থায় নতুন একটি শব্দ ভীতির সঞ্চার করছে আর তা হল— রি-ইনফেকশন। বাংলায় বললে পুনঃসংক্রমণ। কোনও ব্যক্তি একবার সংক্রামিত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর ফের সংক্রামিত হতে পারে কি না তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা ছিল না এতদিন। বেঙ্গালুরুর এক ঘটনা থেকে প্রমাণিত, পুনঃসংক্রমণ হওয়া অসম্ভব নয়।
বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি হাসপাতালে এক ২৭ বছরের তরুণীর দ্বিতীয়বার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়ার কথা জানা গেল। তাঁর শরীরে এমনিতে কোনও মারণ রোগ নেই ফলে আগের বার চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। এর আগে জুলাই মাসে কোভিড পজিটিভ ছিলেন ওই তরুণী। জ্বর, কাশি এবং গলা ব্যথার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল সেবার। ২৪ জুলাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর দ্বিতীয় দফাতেও সেই একই লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি। জানা গেছে, বেঙ্গালুরু শহরে পুনঃসংক্রমণের ঘটনা এটাই প্রথম।
ওই হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রতীক পাটিল বলছেন, সাধারণত একবার করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার দু’ থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ‘কোভিড হিমোগ্লোবিন-জি’ নামক এক অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু ওই তরুণীর শরীরে তেমন কোনও অ্যান্টিবডি ছিলই না। প্রতীক পাটিল বলছেন, হয় তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি অথবা হলেও অল্পদিনেই তার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। এই ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেছে চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা মহল। কারণ প্রতিষেধক তৈরি করতে বেশ কিছু প্রশ্ন মাথায় রাখা হচ্ছে। যেমন, সুস্থ হওয়ার কতদিন পর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, সুস্থ হওয়ার পর সব মানুষের শরীরেই অ্যান্টিবডি হয় কি না এবং কোভিড অ্যান্টিবডির প্রভাব মানবদেহে কতদিন থাকে। তরুণীর পুনরায় সংক্রামিত হওয়ার ঘটনায় তাই উদ্বেগে সংশ্লিষ্ট মহল।