নয়াদিল্লি: প্রায় ৪৫ বছর বছর ভারত-চিন সীমান্তে গুলি! ভারত নাকি প্রথম গুলি চালিয়েছে৷ চিনের এই দাবি উড়িয়ে মঙ্গলবার ভারতীয় উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় ভারত-চিন সেনার মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়েছি। রেচিং লা বর্ডারের কাছে দুপক্ষই গুলি বর্ষণ করেছে৷ পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত বলেই খবর। কিন্তু চিনের তরফে বলা হল, নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় সেনা প্রথম গুলি চালায়৷ পাল্টা ভারতের তরফে জানানো হয়েচে, চিনা সেনাকে সতর্ক করতে জবাব দিতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় সেনা৷
চিন সরকারের এক সংবাদপত্রের দাবি, ভারতীয় সেনা অবৈধভাবে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ দিকের পর্বতমালা সংলগ্ন নিয়ন্ত্রণ রেখা পার করে৷ এ বিষয়ে চিনের লালফৌজের এক মুখপাত্র ঝেং সুইলি জানান, এই ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি লংঘন করেছে ভারত। দ্রুত ভারতকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন সেনাদের প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ভারতীয় সেনাদের এই ভুল কাজের ফলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারত। ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়ে ঝড়তে পারত রক্তও। ঝেং সুইলি ভারতকে এই ধরণের বিপজ্জনক পদক্ষেপ থেকে দূরে থাকার নিদান দিয়েছেন।
ওই মুখপাত্র আরও দাবি করেন, দ্রুত সামনের সারিতে থাকা ওই সেনাবাহিনী সরিয়ে নিয়ে তাদের ভুলের শাস্তি প্রদান করুক ভারত সরকার। তিনি বলেন, এই ধরণের ঘটনা যাতে দ্বিতীয়বার না ঘটে তা ঠিক করতে ভারতকেই। পশ্চিম লাদাখ সীমান্তের ইতিমধ্যেই ভারত শক্তি বাড়িয়েছে। সেখানে কয়েকদিন আগে চিনা সেনা অনুপ্রবেশ করতে গিয়েছিল। ভারতীয় সেনারা তাদের রুখে দিতে সক্ষম হয়েছিল৷ ঝেং সুইলি'র মন্তব্যে পাল্টা ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমন আনন্দ জানান, কিছুদিন আগে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই নিয়ে গত ২৯ ও ৩০ আগস্ট রাতে দুই দেশের সেনাবাহিনী ও কূটনীতিকদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছিল। সেখানেও চিন প্রথমে প্ররোচিত ভাবে সীমা লংঘন করে। পাশাপাশি ওই বৈঠকের অবস্থান বদলেরও চেষ্টা করেছিল চিনের লাল ফৌজ। কর্নেল আনন্দ আরও বলেন, গত এপ্রিল-মে মাস থেকে একাধিকবার ফিঙ্গার এরিয়া, গালওয়ান উপত্যকা হট স্প্রিং এবং কংরুং এলাকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনা সেনা। জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন। ফলে সীমান্তে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের ফরওয়ার্ড পজিশনের খুব কাছাকাছি চলে আসার চেষ্টা করে চিনা সেনা৷ এমনটাই মত ভারতীয় সেনাবাহিনী৷ তারা আরও জানায়, চিনের সেনা বাহিনীকে ভয় দেখাতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়৷ ইদানিং কাল ভারত কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না৷ সারজিক্যাল স্ট্রাইক তার বড় উদাহরণ৷ চিন যে আগেই সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল এ কথা সত্য।