নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের রোষে পড়ল এক বেসরকারি চ্যানেলের শো। এখন থেকে বন্ধ করে দেওয়া হল সম্প্রচার। শোয়ের বিষয়বস্তু ছিল মুসলিমরা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অনুপ্রবেশ করছে। রুষ্ট সুপ্রিম কোর্টের দাবি এক বিশেষ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কুৎসা করার চেষ্টা হচ্ছে এই শোয়ের মাধ্যমে। একটি সম্প্রদায়কে নিশানা করে বিশেষভাবে দাগিয়ে দেওয়া যায়না।
এই অভিযোগ তুলে সুদর্শন টিভি তথাকথিত জনপ্রিয় শোটি বন্ধ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানা করা, মর্যাদা ক্ষুন্ন করা অথবা কারো ব্যক্তিগত চরিত্রহনন করার ক্ষেত্রে সমাজে বৈদ্যুতিন মাধ্যমের প্রভাব যথেষ্ট। আমলাতন্ত্রে মুসলিম অনুপ্রবেশ নিয়ে অভিযোগ তোলা এই শোয়ের সম্প্রচারের বিরুদ্ধে বাদানুবাদ চলাকালীন এই তথ্য নির্দেশ করে সুপ্রিম কোর্ট।
একজন বিচারক বলেন বৈদ্যুতিন মাধ্যমের মূল সমস্যা হল টিআরপি, যা দিনের পর দিন খবরকে মুচমুচে ও চাঞ্চল্যকরভাবে পরিবেশন করতে গিয়ে মানুষের মর্যাদাহানি করে এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে ভুলের পর ভুল করে। তিন বিচারকের এক বেঞ্চ বৈদ্যুতিন মাধ্যমের মান নির্ধারণের জন্য পাঁচজন পরিচিতি সম্পন্ন নাগরিককে নিয়ে একটি প্যানেল গঠনের কথা বলেন।
যখন প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার তরফে নিয়মবিধি মেনে চলার দাবি ওঠে তখন তীব্র শ্লেষে প্রষশ্ন ছুঁড়ে দেন বিচারপিত ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন যদি সত্যিই সবকিছু ঠিকঠাক থাকতো তাহলে রোজ আমাদের টিভিতে সেসব দেখতে হত না যা আমরা দেখি। বিচারপতিরা তীক্ষ্ণ মন্তব্যে বারবার বিদ্ধ করেন সুশান্ত সিং রাজপুত মামলার তদন্ত নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলির অত্যধিক বাড়াবাড়ি নিয়ে।
বিচারপতি চন্দ্রচূড় কটাতক্ষ করেন, শো দেখে মনে হচিছিল যেন একটি বিশেষ গোষ্ঠী সিভিল সার্ভিসে সুযোগ পাওয়ায় সঞ্চালক দুঃখপ্রকাশ করছেন। এটা সরাসরি UPSC পরীক্ষাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তার বিরুদ্ধে জাতিভেদমূলক অভিযোগ তোলার সামিল বলেও মনে করেন বিচারপতি। তিনি বলেন এভাবে কোন মুক্ত সমাজে কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া অভিযোগ মান্যতা পেতে পারে না। বাদানুবাদে বারবার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্ন উঠলে আদালত জানায়, একজন নাগরিকের সমান স্বাধীনতা ভোগ করে সংবাদমাধ্যম, আলাদা কিছু নয়।